দুই হাত বেঁধে হাতুরিপেটার পর স্ত্রীর (৪৯) মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন মসে সরকার নামের মাদকাসক্ত এক পাষন্ড স্বামী। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার সকালে স্বামীর বাড়িতে ওই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এঘটনায় স্বামী মসে সরকারকে (৬৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বাগাড়াতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে। মসে সরকারের সাথে ওই নারীর ৩০ বছরের সংসার। তাদের সংসারে তিন ছেলে রয়েছে।
হাসপাতালে শুয়ে ওই নারী বলেন, পিতার বাড়ি থেকে তিনি কিছু জমাজমি পেয়েছেন। সেই সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন মাদকাসক্ত স্বামী মসে সরকার। কিন্তু স্বামীর প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। এনিয়ে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। সোমবার সকালে আচমকা তাকে ঘরে ঢেকে নিয়ে কিলঘুষি মারেন মসে সরকার।
একপর্যায়ে ওড়না দিয়ে দুই হাত বেঁধে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতুরি দিয়ে পিটিয়েছেন। চিৎকার করলে ব্লেড দিয়ে মুখ ফালাফালা করার ভয় দেখান। শারীরিক নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেন স্বামী মসে সরকার। এঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগি ওই নারী।
স্থানীয়রা জানান, গোঙ্গানির শব্দ শুনে বেলা ১১ টার দিকে প্রতিবেশীরা ওই নারীকে উদ্ধার করে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে তাকে হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।
বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক রেজাউল করিম বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীর দুই হাত-মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। আঘাতগুলো গুরুত্বর কিনা তার জন্য পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেশি মোকলেসুর রহমান ও আমেনা বেগম জানান, জমাজমি নিয়ে মসে সরকার প্রায়শই ওই নারীকে নির্যাতন করতেন। বাকবিতন্ডা, গালমন্দ করার পাশাপাশি গায়েও হাত তুলতেন মসে সরকার।
তারা বলেন, শারীরিক নির্যাতনের পর ওই নারীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার পর বিষয়টি তারা জানতে পারেন। পরে স্বজনদের খবর দিয়ে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে অভিযুক্ত মসে সরকারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেনজির আহমেদ বলেন, নির্যাতনের শিকার নারী থানায় বাদি হয়ে স্বামী মসে সরকারকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত মসে সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্ত্রীর ওপর চালানো নির্যাতনের কথা শিকার করেছেন মসে সরকার। অভিযুক্তকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।