
বেলজিয়ামের বিভিন্ন স্থানে ঈদুল ফিতর পালন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রবাস জীবনের যান্ত্রিকতা দূরে সরিয়ে ঈদেরদিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা মিলিত হন একে অপরের সঙ্গে।
দেশটিতে ঈদের দিনেও অনেক প্রবাসীর কর্ম দিবস থাকে। তবু তারাখুব ভোরে নতুন পোশাক পরে আগেভাগে বাসা থেকে বের হয়ে ঈদের নামাজ পড়েন। যাদের কর্মদিবস থাকে না, তাদের অনেকেমসজিদে নামাজ শেষে পরিবার পরিজন নিয়ে বের হন ঘুরতে।
সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবাই একত্রিত হয়ে মেতে ওঠেনগল্প-আড্ডায়। আড্ডায় উঠে আসে দেশে অবস্থানকালে পরিবার-পরিজনদের সাথে ঈদ উদযাপনের নানা মাত্রিক ঘটনাবলী।আড্ডার পাশাপাশি চলে ঈদ উপলক্ষে রান্না করা বিরিয়ানি, পোলাও, কোর্মা, মাংসের চপ, রোস্ট, জর্দা আর গৃহবধূদের নিজহাতের তৈরি দইসহ নানা স্বাদের খাবার পরিবেশন।
এই মহামিলনের পাশাপাশি প্রবাস থেকে দেশের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে চলেটেলিফোনে আলাপচারিতা। এই আলাপে কারো কারো নয়ন ভেসে যায় জলে। অশ্রুসিক্ত নয়নে দেশে একসঙ্গে ঈদ না করতেপারার আক্ষেপ করেন প্রবাসীরা। ঈদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে প্রবাসী মো রাশেদ ভুঁইয়া বলেন, খুব মিস করি শৈশবেরসেই আনন্দের ঈদকে।
সেই দিন সময় আর কখোনই ফিরে পাবার নয়। ব্যস্ত এই প্রবাস জীবনে পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের নিয়েযদিও ঈদ করি, কিন্তু সেই সময়ের ঈদ এখন কেবলই স্মৃতি। সাকিব মিয়া ,আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, সবাই আছে শুধু সময়টাইনেই। ঈদের দিন সময় বের করে বাংলাদেশের আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। শুধু এতটুকুই। সময় বড়ইনিষ্ঠুর, ইচ্ছে করলেই সব কিছু হয় না।
তবু প্রবাসের ঈদ পরিবার পরিজন নিয়ে উপভোগ করি আনন্দ করি। এম এম হাসান বলেন, বাংলাদেশের মত আনন্দ করে এখানে ঈদ হয় না। প্রবাসে আমরা বাংলাদেশিরা একে অপরের বাড়িতে যাই, শুভেচ্ছাবিনিময় করি। রোমান্থন করি দেশের সেই সময়ের স্মৃতি। নতুন প্রজন্মের অনেকেই আমাদের সময়কার সেই ঈদের আনন্দবুঝতেই পারবে না।
তিনি বলেন, চলার পথে রাজধানী ঢাকা শহরের মতো এখানে কোন যানজট না থাকলেও ইচ্ছে করলেই বাসআর ট্রেনের টিকিট কেটে দেশের বাড়িতে যাওয়া যায় না। দেখা হয় না মমতাময়ী মা-বাবা পরিবার পরিজনদের সঙ্গে। তাইতোতথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনজনদের খোঁজ খবর নেই, আর মুঠোফোনে তাদের ডিজিটাল হাসির ছবি দেখেই পালন করতে হয়আমাদের ঈদ উৎসব। এভাবেই প্রতিটি প্রবাসী বিদেশের মাটিতে কাটিয়ে দিচ্ছে মাসের পর মাস,বছরের পর বছর।
শুধুমাত্রজন্মভূমির রেমিটেন্স বৃদ্ধি এবং নিজের পরিবারের সুখের আশায়। তাদের ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ফুটানোর প্রচেষ্টায়।