ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেছেন, দেশের সকল ডাকঘরকে উন্নত, আধুনিক ও স্মার্ট ডাকঘরে পরিণত করবো।
এ লক্ষে আমরা কাজ শুরু করেছি। মে মাসের মধ্যে ৫০০ ডাকঘরকে স্মার্ট করবো। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল ডাকঘরকে স্মার্ট ডাকঘরে পরিণত করবো।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় নাটোরের সিংড়া উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের হাইটেক পার্কে হার পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও জয়পুরহাট জেলার ৫৮০ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
পলক বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার নিশ্চিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন নির্ধারণ করেছেন একইভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে সংরক্ষিত নারী মেম্বার, কাউন্সিলর ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
পাশাপাশি বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপিকে মহান জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী এমপিকে মহান জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার নির্বাচন করে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেতৃত্ব দানের সুযোগ করে দিয়েছেন।
সমাজে নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ১৯৯৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ৬০ শতাংশ নারী কোটা নির্ধারণ করে বৈপ্লবিক এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। এভাবেই অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটা দেশ ও জাতি সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, একটা দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অর্ধেক শক্তি দিয়ে কাজ করলে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়, সম্পূর্ন শক্তি দিয়ে কাজ করলেই দেশ ও জাতি এগিয়ে যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক নয়, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত উদ্যোক্তা সংস্কৃতির বিকাশ করতে হবে এবং তরুণ-তরুণীদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা বাংলাদেশের সকল তরুণ-তরুণীকে দক্ষ মানবসম্পদ ও জনশক্তিতে রূপান্তর করতে চাই। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে এবং প্রতিবছর কর্মজীবনে প্রবেশ করা প্রায় ২৫ লক্ষাধিক তরুণদের পাশাপাশি আমাদের নারী গোষ্ঠীকে ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছি।
আমরা প্রথমে ‘সি পাওয়ার’ নামে একটা পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছিলাম; সেখানে ১০,৫০০ জন নারী উদ্যোক্তা তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করেছি। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আমরা নতুন আরেকটি প্রকল্পের প্রস্তাব দেই এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা খুশি হয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেন এবং নিজেই নামকরণ করেন ‘হার পাওয়ার’। নারী শক্তিকে প্রযুক্তির শক্তির সাথে সম্মেলন ঘটিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান।
‘হার পাওয়ার’ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩০টি উপজেলায় নারীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধিতে নারী ফ্রিল্যান্সার, নারী আইটি সার্ভিস প্রোভাইডার, নারী ই-কমার্স ও নারী কল সেন্টার এজেন্ট এই ৪টি বিষয়ে মোট ২৫,১২৫ জন নারীকে ৫ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ ও ১ মাসের মেন্টরশীপ প্রদান করা হবে। যেসব প্রশিক্ষণার্থী সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করবে তাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ১টি ল্যাপটপ প্রদান করা হবে।
আমাদের প্রতিটা নাগরিককে আমরা অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক, প্রগতিশীল, উদ্ভাবনী, সৃজনশীল স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের অর্থনীতিকে ক্যাশলেস ও ইন্টারঅপারেবল স্মার্ট অর্থনীতিতে পরিণত করতে চাই।
সরকারি সেবা ব্যবস্থাকে পেপারলেস, ফেইসলেস, কানেক্টেড ও দুর্নীতিমুক্ত স্মার্ট সরকার ব্যবস্থায় পরিণত করতে চাই। বাংলাদেশের শহর-গ্রামের দূরত্ব দূর করে, ধনী-দরিদ্র বৈষম্য দূর করে, নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিকরূপ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. ওয়ালীউল হাসান, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া সার্কেল) মো. আক্তারুজ্জামান, টিএমএসএস এর নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. হোসনে আরা বেগম, শেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবিব রুবেল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন হার পাওয়ার প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) রায়হানা ইসলাম।