নাটোরের চারটি আসনে নৌকা স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন দলের ৩২ প্রার্থী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে ভোটার টানতে পারেননি ২৪ প্রার্থী। নৌকা আর আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্রের চাপে সিমীত ভোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। হারাতে হয়েছে জামানতও।
৭ জানুয়ারী ভোটের বাক্সে লাঙ্গল, কুলা, হাতুড়ি—মশাল প্রতীকেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২৪ প্রার্থী মোট কাস্টিং বৈধ ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগের কম ভোট পেয়েছেন। অর্থাৎ ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ভোট পেয়েছেন এসব প্রার্থীরা। ২৪ প্রার্থী জামানত বাজেয়াপ্তের বিষয়টি ইত্তেফাককে নিশ্চিত করেছেন নাটোরের জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা।
নাটোরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, নাটোর—১ লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনে ৭, নাটোর-২ নাটোর সদর-নলডাঙ্গা আসনে ৩, নাটোর-৩ সিংড়া আসনে ৭ এবং নাটোর-৪ গুরুদাসপুর—বড়াইগ্রাম আসনে ৭ প্রার্থী মোট কাস্টিং বৈধ ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগের নিচে ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
তথ্যমতে— ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৩৬৯ জন ভোটারের নাটোর-১ আসনে ভোটের মাঠে লড়াই হয়েছে নৌকা বনাম আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর। এখানে নৌকাকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। এই দুই প্রার্থী ব্যতিত ওয়ার্কার্স পার্টির ইব্রাহীম খলিল হাতুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৩০ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী লে. কর্নেল (অব.) মো. রমজান আলী সরকার (কাঁচি) ২ হাজার ৬১৪, জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার মো. আশিক হোসেন (লাঙ্গল) ২ হাজার ৩৬, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজল রায় (ঢেঁকি) ১ হাজার ১৩৬, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের (ইনু) ইঞ্জিনিয়ার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (মশাল) ৮১৭, স্বতন্ত্র জামাল উদ্দিন ফারুক (ট্রাক) ৪৬৮ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) লিয়াকত আলী একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৫১ ভোট।
৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৯ ভোটারের নাটোর-২ নাটোর সদর-নলডাঙ্গা আসনে আবারো নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন শফিকুল ইসলাম শিমুল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী। এখানে জাতীয় পার্টির মো. নুরন্নবী মৃধা (লাঙ্গল) ২ হাজার ৭১৫, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির মোহাম্মদ বজলুর রশিদ (ডাব) ৮৩৯, এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মো. শরিফুল ইসলাম মশাল প্রতীকে পেয়েছেন ৫৮০ ভোট।
নাটোর—৩ সিংড়া আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২০ হাজার ৪৭০। এই আসনে প্রতীমন্ত্রী জুনাইদ আহম্মেদ পলক আবারো নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দলীয় স্বতন্ত্র। এই দুই প্রার্থী ব্যতিত জাতীয় পার্টির মো. আনিছুর রহমান (লাঙ্গল) ৭৭৯, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মো. আনোয়ার হোসেন (কুলা) ২৩০, তৃণমূল বিএনপির মো. আবুল কালাম আজাদ (সোনালী আঁশ) ২১৯, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (ট্রাক) ১২৪, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আমিরুল ইসলাম (ডাব) ২০৮, তরিকত ফেডারেশনের (বিটিএফ) মো. আলতাফ হোসেন (ফুলের মালা) ৬৫, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির মো. মিজানুর রহমান মিজান হাতুরি প্রতীকে পেয়েছেন ৬৩৮ ভোট।
৩ লাখ ৮ হাজার ৭৯৪ ভোটারের নাটোর-৪ গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে পরাজিত করে আবারো নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী। এই দুই প্রার্থী ব্যতিত জাতীয় পার্টির মো. আলাউদ্দিন মৃধা (লাঙ্গল) ২৮৬, তৃণমূল বিএনপির মো. আব্দুল খালেক সরকার (সোনালী আঁশ) ৭২, জাতীয় পার্টির (জেপি) এস এম সেলিম রেজা (বাইসাইকেল) ২৫৩, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) গাজী আবু সায়েম রতন (নোঙ্গর) ১৪০, বাংলাদেশ কংগ্রেসের শান্তি রিবেরু (ডাব) ২৭৩, মো. জাহিদুল ইসলাম (ঈগল) ১ হাজার ২৯১ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সুজন আহমেদ দোলনা প্রতীকে ২ হাজার ৭১৫ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, মোট বৈধ কাস্টিং ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগের কম ভোট পাওয়ায় নিয়মানুযায়ী এসব প্রার্থীর জামানত বাতিল হয়েছে।