নির্বাচন এলেই প্রার্থীদের ভিতরে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠে এলাকা। নানা ধরণের নির্বাচনি স্লোগান আর মাইকের আওয়াজে ভরপুর হয়ে উঠে হাট বাজার। চায়ের দোকানে উঠে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
মিছিল মিটিং আর সমাবেশে প্রার্থীদের ব্যাস্ত সময় অতিবাহিত হয়। নির্বাচন এলেই চরফ্যাশন মনপুরায় বইতো উৎসবের আমেজ। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সন্নিকটে চলে আসলেও এখনো জমে উঠেনি নির্বাচনি আমেজ।
ভোলা-৪( চরফ্যাশন মনপুরা ) মোট ভোটার ৪,৫৩,৬৮৩ জন। তার ভিতরে পুরুষ ভোটার ২,৩৮,১৭০ জন, মহিলা ভোটার ২,১৫,৫০৭ জন এবং হিজড়া ভোটার ৬ জন। এই আসনে প্রতিদ্বন্বীতা করছে মোট ৫ জন প্রার্থী।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আগেই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্বান্ত আগেই জানিয়েছে। এই আসনের টানা তিন বারের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব দলীয় মনোনয়ন ও নৌকা প্রতীক পাওয়ায় তার বিপক্ষে দলীয় কোনো নেতৃবৃন্দ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াননি।
কিন্তু তারপরেও বর্তমান ৫ জন প্রতিদ্বন্বী প্রার্থীর ভিতরে হবে লড়াই। প্রার্থীরা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী চরফ্যাশন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব,তৃণমূল বিএনপি থেকে মোঃ হানিফ,জাতীয় পার্টি থেকে মোঃ মিজানুর রহমান,ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে মোঃ আলাউদ্দিন,স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবুল ফয়েজ নির্বাচনে লড়ছেন।
৫ জন প্রার্থী থাকলেও এই আসনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব তিনি নিয়মিতই বিভিন্ন এলাকার সহ গ্রাম মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন। তার নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন নৌকার পক্ষে।
তবে কিছু কিছু জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল ফয়েজ এর মাথাল মার্কার পোস্টার দেখা গেলেও দেখা যায়নি গণসংযোগ পথসভা। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন নৌকার প্রার্থী ছাড়া বাকি ৪ জন প্রার্থীর দেখা এখন পর্যন্ত চরফ্যাশন-মনপুরাবাসী পায়নি বলে জানা যায়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে যেরকম জমজমাট আয়োজন কিংবা সভা-সমাবেশ কিংবা প্রচারণ হওয়ার কথা এই আসনে নৌকা প্রতিক বাদে তার কোনকিছুই নেই চরফ্যাশন-মনপুরায় ।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সহ চরফ্যাশন পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর পোষ্টার, ব্যানার ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীর কোন পোষ্টার ব্যানার নেই।
কিছু সংখ্যক জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল ফয়েজ এর মাথাল মার্কার পোস্টার দেখা গেলেও বাকি ৩জনের কোন খবর নেই। এই অবস্থায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ হয়ে উঠেছে নিরুত্তাপ।ভোটের হাওয়া লাগেনি এখনো এই অঞ্চলে।
চরফ্যাশন পৌরসভার কয়েকজন চা দোকানদারের সাথে সংসদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে তারা সংসদ নির্বাচনে অনীহা দেখিয়ে বলেন, একটি নির্বাচনের যেই আমেজ থাকে তা বর্তমানের নির্বাচনে নেই।
এই নির্বাচনে পরিষ্কার হয়ে গেছে এখানে নৌকাই জিতবে। সুমন নামের এক ভ্যান চালকের সাথে কথা বললে সে বলেন, এখানে নৌকা মার্কার প্রচার প্রচারণ ছাড়া আর কোন মার্কার প্রচার নাই। নির্বাচনে আমরা দেখতে পাচ্ছি এখানে নৌকা মার্কা জিতে আছে তাহলে আমাদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে অযথা বিশৃঙ্খলার ভিতরে পড়ার দরকার আছে?
আপনারা কি নৌকা মার্কার বাইরে কোন মার্কার এখন পর্যন্ত কোন পোস্টার দেখেছেন? তাহলে নির্বাচন জমবে কিভাবে বলেন?এআসনে হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর জয় অনেকে অগ্রিম ভেবে নিয়েছে বলে জানান। চরফ্যাশন পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দা ও সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা জানান বিএনপি নির্বাচনে না আসায় এই আসনে ভোটের লড়াই জমতো আওয়ামী লীগ দলের দুই প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং সাবেক যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিনের ভিতরে।
কিন্তু মেজবাহ উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন থেকে সরে গিয়েছেন বিদায় বর্তমানে নির্বাচন হয়ে গেছে সাদামাটা। বাকিঁ যে কয়জন প্রার্থী আছে তাদের এই আসনে সেইরকম কোন প্রভাব নেই বলে জানান তারা।
এদিকে, সরকার থেকে বলা হয়েছে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে হবে। কিন্তু এই আসনে উত্তাপ বিহীন নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কতটা বাড়বে সেটা নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়!