ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক প্রার্থী শাহজাহান ওমর এর নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর এ বিষয়ে দলের সাধারণ সভায় এক রেজুলেশনে ওমরের নির্বাচন না করার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়।
অপর দিকে কাঠালিয়া আওয়ামীলীগও এখন পর্যন্ত শাহজাহান ওমরের নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ শুরু করেনি। তারা নৌকার পক্ষে কাজ করতে প্রার্থীর আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত ওমরের পক্ষে মাঠে নামেনি।
রাজাপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট এএইচএম খাইরুল আলম সরফরাজ স্বাক্ষরিত রেজুলেশনে উলেখ করা হয় শাহজাহান ওমর নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ পাবার পর থেকে এখন পর্যন্ত দলের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে আসেনি।
ওমরের নিজস্ব বাস ভবন যেটি বিগত দিনে বিএনপি অফিস ছিল সেখানে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালিত করছে। বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করছে। এসময় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীনতা বিরোধী, থানা শান্তি কমিটির সভাপতির পুত্র এবং থানা রাজাকার বাহীনীর কমান্ডারের পুত্র তার সাথে রয়েছে। রেজুলেশনে আরো উল্লেখ করা হয় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের সাথে না নিয়ে নির্বাচন করা যায়না।
এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শাহজাহান ওমর বিগত দিনে এ আসনে একাধিকবার এমপি ও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সেই সময় তিনি তার প্রতিপক্ষ হিসাবে উপজেলা আওয়ামলীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও হয়রানী করেন।
তাই তিনি এখন তাদের নিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে পারবেনা। নিরুপায় হয়ে এ আসনের রাজাপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির কে নিয়ে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলদেশ গড়তে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মনিরের পক্ষে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। রাজাপুর উপজেলার ২৫ নেতাকর্মীর স্বাক্ষর রয়েছে ঐ রেজুলেশনে।
এ প্রসঙ্গে নৌকার মনোনীত প্রার্থীর বিরোধীতা ও রেজুলেশনের সিদ্ধান্তে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা অমান্য করা হলো কিনা জানতে চাইলে সভপতি খায়রুল আলম সরফরাজ বলেন, নেত্রী বলেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির অপশন আছে এলাকায় দলীয় কোন ব্যক্তির গ্রহনযোগ্যতা থাকে সে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবে। কিন্তু আমরা ওমর সাহেবের অপেক্ষা করে তাকে পাইনি।
তাই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে আমরা নেমেছি। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে আমাদের অফিসে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনির এসছিলেন। আমার তাকেও বিষয়টি অবহিত করেছি।
এ সময় ঈগল প্রতীকের স¦তন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির সাধারন সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনিরের পাশে উপবিষ্ট থাকার একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি তার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে খান সাইফুল্লাহ পনির বলেন, আমি গিয়ে ছিলাম নৌকার মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান ওমরের অনুরোধে তার সাথে দেখা করতে।
তখন আওয়ামীলীগ অফিসে গিয়ে ছিলাম। সেখানে মনির এসেছিল। নেত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে কিসের রেজুলেশন। দলের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত। মনিরের সাথে নির্বাচনী কোন আলোচনা হয়নি। দলের সিদ্ধান্তের সাথে রেজেুলেশনের কোন সম্পর্ক নেই।
এ প্রসঙ্গে শাহজাহান ওমরের মোবাইল নম্বরে বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার নির্বাচনী সমন্বয়কারী ও মুখপাত্র ব্যারিষ্টার মিজানুর রহমান বলেন, রাজাপুর আওয়ামীলীগের রেজুলেশন গুজব ও ভিত্তিহীন।
এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলে তা দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী। কারণ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া যুক্তিসংগত নয়।
এদিকে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী শাহজাহান ওমরের সমর্থনে কাঠালিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা এখনো মাঠে নামেনি।
গত ১৮ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনা শুরু হলেও নৌকা প্রার্থীর পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন ডাক আসেনি।
তাই কেহ প্রার্থীর পক্ষে কাজ শুরু করেনি আবার কেহ এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের পক্ষে মাঠে নেমে পরেছে। এমনটাই জানিয়েছে রাজাপুর-কাঠালিয়া আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
অপরদিকে কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বিমল সমাদ্দার ও সাবেক সাধারন সম্পাদক তরুন সিকদার জানান, এখন পর্যন্ত আমারা নৌকা প্রার্থীর সাথে নামতে পারিনি। তিনি এর আগে কাঠালিয়ায় এসে সভা করলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সেখানে কেহই যাইনি।
তখন তাকে সাংগঠনিক ভাবে জানিয়ে ছিলাম আমরা তার সাথে কাজ করতে চাচ্ছি। কিন্তু তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে যদি আমাদের না ডাকেন তাহলে আমরা কিভাবে যাই।