ছবির ক্যাপশন ঃ কাঠালিয়ায় খাল দখল করে ফলের বাগান ও খালের প্রবেশ মুখে দখলের উদ্দেশ্যে নির্মিত মসজীদ।
কাঠালিয়া উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের দত্তের পশুরীবুনিয়া গ্রামে রেকর্ডীয় খালের উপর মসজীদ নির্মান করে পানি সংকটের সৃষ্টি করা হয়ছে।
গ্রামেরই প্রভাবশালী একটি পরিবারের বিরুদ্ধে খাল ভড়াট করে এ সংকট সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসির অবিযোগে এতে বড় খালের জোয়ার ভাটার প্রবাহ বন্ধ হয়ে আটকে থাকা পানি পচে দূর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। তাই দখল করা খালের পার্শবর্তি ১শ পরিবার চরম দূর্ভোগে পরেছে। বিশেষ করে গ্রামের নারীদের অনেক দূর থেকে হেটে কলসিতে ব্যবহার্য পানি আনতে হচ্ছে। প্রায় ১ বছর ধরে এ সমস্যা সমাধানে এলাকাবাসি জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
জানাযায়, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া ও ঝালকাঠির কাঠালিয়া সীমান্ত এলাকায় ভান্ডারিয়া উপজেলার পোনা নদী থেকে কাঠালিয়ার দত্তের পশুরীবুনিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদ্রাসা হতে বেলায়েত হাওলাদারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এ খালটির সিমানা। কিন্তু প্রবেশ মুখে এটি জবর দখল করে অবৈধ ভাবে মসজীদ নির্মান করায় জনসাধারনের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
চলতি বছরের গত ২২ সেপ্টেম্বর খালটি পুনঃ খননের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন মো. শাহজাদা জমাদ্দার, বাচ্চু হাওলাদার, রিয়াজ উদ্দিন। অভিযোগে উল্লেখ করেন, খালের পানি তাদের শতাধিক পরিবার প্রতিদিন ব্যবহার করে গোসল, ধোয়াপাল্লা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেন।
কিন্তু এটি রেকর্ডিয় খাল হলেও এলাকার লাল মিয়া জমাদ্দার ও তার ভাইয়েরা কোন কোন স্থান থেকে ভড়াট করে দখল নেয়। বিশেষ করে খালটির প্রবেশ মুখের জায়গা দখল নিতে একটি মসজীদ উঠিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
ধর্ম ব্যবসায়ী এই লাল মিয়া জমাদ্দার পার্শবর্তি ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারি শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে মাদ্রাসায় ভূয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে এমপিও ভূক্ত করিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাতেরর অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- খাল দখল করে মাঝে কলা সুপারি ও নারিকেলের বাগান করা হয়েছে। এ খালটি ১০ নং দত্তের পশুরীবুনিয়া মৌজার ৭৫ নম্বর দাগে অবস্থিত। এলকার সাবেক মেম্বর মো. শাহজাহান, গৃহবধূ পারুল ও মিনু বেগম জানান, খালটি জবর দখল হওয়ায় গত ১ বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে পানি নদীতে সরে যেতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
আবার শুকনো মৌসুমে পানি না থাকায় নদী থেকে পায়ে হেটে আনতে হচ্ছে পানি। সেচের অভাবে খালটির দুপার্শের প্রায় ২শ একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ করে এই এলাকায় নলকুপে পানির লেয়ার না পাওয়ায় তা বসানো সম্ভব হচ্ছেনা। এ অবস্থায় খালটি উদ্ধার করে পুনঃ খনন করার জোর দাবি জানিয়েছে এলাকার নারী পুরুষ।
এ প্রসঙ্গে লাল মিয়া জমাদ্দার খালের জমিতে বাগান ও মসজীদ নির্মান করার কথা স্বিকার করে বলেন, খালটি রেকর্ডিয় হলেও এর সাথে আমাদেরও জমি আছে। মসজীদটি মাদ্রাসার মধ্যে ছিল।
সেখান থেকে সরিয়ে এনে এ জায়গায় আনা হয়েছে আরো আগেই। তবে প্রয়োজনে খালের জায়গা থেকে এসব সরিয়ে ফেলা হবে। কিন্তু কেন এসব করে খাল বন্ধ করেছেন এমন প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে পারেনি লাল মিয়া ও তার স্বজনরা।
এ বিষয়ে পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শিশির দাস জানান, এটি এসএ, আরএস ও সিএস পর্চার রেকর্ডিয় খাল। দীর্ঘদিন খালটি গ্রামের লোকজন ব্যবহার করলেও একটি পরিবার উদ্দেশ্য মূলক ভাবে জবর দখল করায় গ্রামে শতাধিক পরিবারের পানি সমস্যা চরম আকার ধারন করেছে।
বিষয়টি ইউএনও স্যার আমার কাছে জানতে চাওয়ায় তাকে সত্যতা অবহিত করেছি। এ বিষয়ে কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নেছার উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।
খোঁজ খবর নিয়ে সত্যতা পেলে জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে কোন প্রভাবশালী বা প্রভাবের বিষয় থাকবেনা। তিনি গুরুত্বের সাথে বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলেও জানান।