
সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবীতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক গৃহবধু- প্রতীকী ছবি
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবীতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক গৃহবধু ময়না বেগম (২১) ছন্দনাম। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর-গোরকমন্ডল গ্রামে। এ ঘটনায ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। গৃহবধুকে একনজর দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন শতশত নারী-পুরুষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চর-গোরকমন্ডল গ্রামের ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন।
জানা গেছে, চর-গোরকমন্ডল এলাকার ফজর আলীর ছেলে মনছুর আলীর সাথে ২০১৯ সালে লালমনিরহাট সদর উপজলার জুম্মারপাড়া বাহাদুর মোড় এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে ওই গৃহবধুর সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে সম্পুর্ন হয়। চার বছর সংসার জীবনে ৩ বছরের এক ছেলে সন্তানের জননী ওই গৃহবধু। এদিকে গৃহবধুর স্বামী জীবন জীবিকার তাগিদের প্রায় সময় ঢাকায় থাকেন। স্বামী বাড়ীতে না থাকার সুবাদে একই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে পল্লীচিকিৎসক রেজাউল ইসলাম ওই গৃহবধুর সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। আড়াই বছরের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে গৃহবধুর গর্ভে সন্তান আসে। ওই সময় গৃহবধু গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করতে চাইলেও পরকীয়া প্রেমিক পল্লীচিকিৎসক রেজাউল ইসলাম গর্ভের সন্তানকে নষ্ট না করার জন্য প্রেমিকা গৃহবধুকে জানিয়ে দেন।
পরে প্রেমিকের কথা মতো গর্ভের সন্তানকে যত্নসহকারে দেখাশুনা করেন। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার আড়াই মাস ধরে সকল ভরণপোষণ দিয়ে আসছিলেন ওই পল্লীচিকিৎসক। ৫ দিন আগে প্রেমিক পল্লীচিকিৎসক রেজাউল ইসলাম ওই গৃহবধূকে কুড়িগ্রাম আদালতে নিয়ে গিয়ে পূর্বের স্বামী তালাক করিয়ে কোর্টম্যারেজের মাধ্যমে বিয়ে করেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে গত শুক্রবার সকালে সন্তানসহ প্রেমিকের বাড়ীতে আসেন।
বাড়ীর লোকজন গৃহবধূকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা প্রদান করে তাড়িয়ে দেন। পরে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ ওই গৃহবধুকে প্রেমিক রেজাউল ইসলামের দাদা জেলহোসেনের বাড়ীতে রাখেন ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পিতৃপরিচয়ের দাবীতে গৃহবধু ওই বাড়ীতে অবস্থান করছে
গৃহবধু জানান, সন্তানের পিতৃপরিচয় ও আমাকে স্ত্রীর পর্যাদা না পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান সংবাদকর্মীকে।
ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি ওই গৃহবধু পল্লীচিকিৎসক রেজাউল ইসলামের বাড়ীতে সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবীতে অবস্থান করছে। পরে শুক্রবার রাতে সেখান থেকে গৃহবধুকে নিয়ে পল্লীচিকিৎসকের দাদা জেলহোসেনের বাড়ীতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা করেছি শনিবার সন্ধা পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি। তবে আড়াই মাস বয়সি ছেলে সন্তান যেন পিতৃপরিচয় পান এবং গৃহবধু যেন স্ত্রীর মর্যাদা পান সেটি এলাকাবাসী হিসাবে আমরা কামনা করছি।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ নাজমুস সাকিব সজীব জানান, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তবে খোজ খবর নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।