
জীবনমান বদলে যাচ্ছে
কক্সবাজারের পেকুয়ায় বানৌজা শেখ হাসিনা সাবমেরিন নৌঘাঁটির কাজ জোরেশোরে এগিয়ে যাচ্ছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ করা হচ্ছে। কাদামাটির সড়ক পাকা হচ্ছে। বিদ্যালয়, হাসপাতাল, মসজিদ হবে। এমন সব অবকাঠামো উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে এলাকার চিত্র।
২০১৭ সালের ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নে ডুবোজাহাজ ঘাঁটির ভিত্তি স্থাপন করেন। সাবমেরিন ঘাঁটিটি গত ২০ মার্চ কমিশনিং লাভের মধ্য দিয়ে নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বানৌজা শেখ হাসিনা নৌঘাঁটিতে যাওয়ার বড়ইতলী মগনামা সড়কটির উন্নয়নকাজ চলছে জোরেশোরে। পেকুয়া বাস স্টপেজ পার হয়ে চৌরাস্তা থেকে কয়েক মিনিট সামনে গেলেই দেখা মিলে পুরনো বড়ইতলীর সরু ভাঙাচোরা সেই সড়ক যেটি নতুন রূপ পেয়েছে ‘বানৌজা শেখ হাসিনা সড়ক’ নামে।
সড়কটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নতুন সড়কটিকে কেন্দ্র করে সড়কের পাশে নতুন নতুন স্থাপনা করছেন স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ী। এই সড়ক শেষ হলেই শোনা যায় সমুদ্রের গর্জন।
এই অংশে সড়কের দুই পাশে একের পর এক লবণের ঘের। যেখানে কাজ করছেন লবণ চাষিরা। সেখানেই শুরু কাঁকপাড়া বেড়িবাঁধ। বেড়িবাঁধ ধরে আধা কিলোমিটার পরই বানৌজা শেখ হাসিনা নৌঘাঁটি।
প্রায় ৩৫০ একর জায়গায় নির্মিত হয়েছে সাবমেরিন ঘাঁটির প্রধান কার্যালয়। নির্মাণ করা হবে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, একটি মসজিদ, একটি হাসপাতালসহ বেশ কিছু স্থাপনা। এর কোনোটির কাজ শুরু হয়ে গেছে।
নৌবাহিনী সূত্র জানায়, বানৌজা শেখ হাসিনা নৌঘাটির কার্যক্রম শুরু হওয়াতে এরই মধ্যে এলাকার মানুষ সুফল পেতে শুরু করেছে। কাঁকপাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ঘাঁটিতে ১৮০০ ছাত্রছাত্রীর জন্য বিএন স্কুল, অ্যাংকরেজ স্কুল, একসঙ্গে এক হাজার মুসল্লি নামাজ আদায়ে সক্ষম মসজিদ, হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।
এর মাধ্যমে এখানকার সমাজব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তনের সঙ্গে প্রান্তিক জনপদে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগবে। একইভাবে জাতীয়ভাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উন্নয়ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, দুর্যোগ প্রাক-প্রস্তুতি, বাণিজ্যিক জাহাজের জরুরি বার্থিং সুবিধা ও ব্লু-ইকোনমি কর্মকাণ্ড বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
মগনামা ইউনিয়নের আফজলিয়াপাড়ার বাসিন্দা লবণ চাষি শামীম আহমেদ বলেন, ‘একবার যদি বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকত পুরো লবণের ঘের ধ্বংস হয়ে যেত। পরিবার নিয়ে তখন অনেক বিপদে পড়তে হতো। এখন স্থায়ী বাঁধ আর বড় রাস্তা হওয়াতে আমাদের খাবার পানির সংকটও আগের মতো নেই।’
কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, ‘সাবমেরিন নৌঘাঁটি স্থাপনের মধ্য দিয়ে শত বছরের দুঃখ দূর হয়েছে এখানকার মানুষের। এই সাবমেরিন নৌঘাঁটিকে ঘিরে এখানে আধুনিক হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদসহ আধুনিক নানা স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। যার সুফল এখানকার মানুষও পাবে। এ জন্য উপকূলীয় এই জনপদের মানুষ বেশি খুশি।’