ঝালকাঠি জেলা কারাগারের কারাধ্যক্ষ (জেলার) মো. আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব ও অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সুমাইয়া আক্তার (২৪) নামে এক নারী কারা মহা পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সুমাইয়া জেলার নলছিটি সদরের অণুরাগ এলাকার এলাকার জাকির হোসেনের মেয়ে ও কারা হেফাজতে থাকা মাদক মামলার আসামী মামুনুর রশিদের স্ত্রী। এ ব্যাপারে সুমাইয়া আক্তার কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বরিশালের ডিআইজি প্রিজন ও ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিাযোগ দিয়েছেন।
সুমাইয়া জানান, সুমাইয়ার স্বামী মামুনুর রশীদ গত ২৯ জুলাই ২০২৩ তারিখ থেকে ঝালকাঠি জেলা কারাগারে হাজতবাসে আছেন। সুমাইয়া তার স্বামীর সাথে দেখা করার জন্যে বারবার জেল গেটে গেলেও স্বামীর সাথে দেখা করতে পারেনি।
পরে জেলের এক কর্মচারীর পরামর্শে জেলার আক্তার হোসেন শেখের সরকারি নম্বর ৩০ জুলাই ফোন করে স্বামীর সাথে দেখা করার বিষয়টি জানান। পরবর্তীতে জেলার মামুনের সাথে দেখার ব্যবস্থা না করিয়ে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন।
এ সুযোগে জেলার সুমাইয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার চেয়ে নেন এবং জেলার তার ব্যক্তিগত নম্বর থেকে সুমাইয়াকে নিয়মিত ফোন করে কথা বলতে থাকেন। এরপর স্বামী মামুনের সাথে দেখা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সুমাইয়ার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিও কল দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে সুুমাইয়ার নলছিটির বাড়িতে গিয়ে একসাথে রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন জেলার।
সুমাইয়া জেলারের এসকল অনৈতিক কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে আর তার স্বামীর সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি এবং তার স্বামী মামুনকে জেলের ভিতরে শাস্তি দিবে বলে ভয়ভীতি দেখান জেলার। সুমাইয়া আরো বলেন, আমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার স্বামীর সাথে দেখা করার অনুমতি দেননি জেলার আক্তার হোসেন।
আমি আমার দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে জেল গেটে স্বামীর সাথে দেখা করার জন্য দিনের পর দিন দাড়িয়ে থেকেছি। ওনার কু প্রস্তাবের সকল রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমি বুধবার আবার জেল গেটে স্বামীর সাথে দেখা করতে গেলে কারারক্ষী দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন।
তাকে টাকা দিতে না পারায় আমাকে স্বামীর সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। আমার বাচ্চারা ওদের বাবার সাথে দেখা করতে না পেরে দিন রাত শুধু কান্নাকাটি করছে। আমার অসহায়ত্ব ও বিপদের সুযোগ নিয়ে জেলার আক্তার হোসেন আমার ইজ্জত নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখ বলেন, জেলাখানার নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিন পর পর বন্দিদের সাথে দর্শনার্থীদের স্বাক্ষাতের ব্যাকবস্থা করা হয়। কিন্তু সুমাইয়াকে তার স্বামীর সাথে প্রতিদিন স্বাক্ষাত করিয়ে দেবার অনুরােধ থাকে।
সেই বারতি সুযোগ না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছে
ঝালকাঠির জেল সুপার ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি মং এছে বলেন, এক দর্শনার্থীকে তার স্বামীর সাথে দেখা করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় জেলারের বিরুদ্ধে কারা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক বরাবর এক নারী অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি।
এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যাবস্থা নেব।