শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে গুরুদাসপুরের দরিকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের ওই আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নাগরিক কমিটি। শুক্রবার সকালে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা বাজারে।
ধারাবারিষা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক মোল্লা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সম্মেলনে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে বুধবার বিকালে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরখাস্তের চিঠি হাতে পান ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক শামসুর রহমান জানান, বুধবার বিকেলে বরখাস্তের কথা মৌখিকভাবে জানলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি আদেশের কপি হাতে পান। আদেশের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আদেশে (স্মারক- উশিঅ/গুরু/নাট/৩২১) বলা হয়েছে- সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর আলোকে ওই সহকারি শিক্ষককে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অনিদিষ্ট সময়ের জন্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষক প্রাতিষ্ঠানিক কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
লিখিত বক্তব্যে তারেক মোল্লা বলেন, শোক সভা সফল করার জন্য নাগরিক কমিটির আয়োজনে ১৪ আগস্ট সন্ধ্যায় একটি মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন সহকারি শিক্ষক মাসুদুর রহমান। এই শিক্ষক মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা আহম্মেদ আলী মোল্লার ঘনিষ্ট হওয়ায় সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মৌখিক নির্দেশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা বরখাস্তের এই আদেশ প্রত্যাহার দাবি করেন।
সহকারি শিক্ষক মাসুদুর রহমান জানান, ধারাবারিষা বাজারেই তার বাড়ি। নাগরিক কমিটির সাথে তিনিও যুক্ত আছেন। জাতির পিতার শোক সভা সফল করতে নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মিছিলে তিনি অংশ নেওয়ায় রাজনৈতিক সিন্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ ম জাহাঙ্গির আলম জানান, আদেশের কপি তিনি বুধবার বিকালে পেয়েছেন। পরদিন বৃহস্পতিবার কপি সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) গোলাম নবী জানান, সরকারি কর্মচারী হিসেবে কোনোভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জাড়ানোর বিধান নেই। বিষয়টি তার নজরে আসায় সহকারি শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে ১৬ আগস্ট কারণদর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সন্তষ্টজনক উত্তর না আসায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি কর্মচারী হিসেবে কেউ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারবেন না। অথচ ওই শিক্ষক মিছিলে অংশ নিয়ে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অশালিন স্লোগান দেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়েছে।