গুরুদাসপুরের দরিকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে ওই শিক্ষক দাবি করছেন- রাজনৈতিক চাপে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে বুধবার বিকালে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। বরখাস্তের চিঠি গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হাতে পেয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক শামসুর রহমান জানান, বুধবার বিকেলে বরখাস্তের কথা মৌখিকভাবে জানলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি আদেশের কপি হাতে পান। আদেশের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আদেশে (১১০৩/৭ নম্বর স্মারক) বলা হয়েছে- সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর আলোকে ওই সহকারি শিক্ষককে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অনিদিষ্ট সময়ের জন্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষক প্রাতিষ্ঠানিক কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে- ১৪ আগস্ট সন্ধ্যায় সহকারি শিক্ষক মাসুদুর রহমান শোক সভা সফল করার জন্য একটি মিছিলে যুক্ত হয়েছিলেন। ওই শিক্ষকের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের ধারাবারিষা গ্রামে। তিনি মূলত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বিরোধী মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা আহম্মেদ আলী মোল্লার লোকজনের সাথে ধারাবারিষা বাজার থেকে বের হওয়া ওই মিছিলে যোগদেন। তিনিই মিছিলের স্লোগান দিচ্ছিলেন।
সহকারি শিক্ষক মাসুদুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় জানান, জাতির পিতার শোক সভা সফল করতে উপজেলার ধারাবারিষার নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মিছিলে তিনি অংশ নিয়ে ছিলেন। ওই মিছিল রাজনৈতিক ছিলনা। ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা আহম্মেদ আলী মোল্লার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় তাকে রাজনৈতিক সিন্ধান্ত অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল। কারণদর্শানোর নোটিশ পাওয়ার পর ২০ আগস্ট তিনি নোটিশের জবাব প্রদান করার পরও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি তার সাথে অবিচার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ ম জাহাঙ্গির আলম জানান, আদেশের কপি তিনি বুধবার বিকালে পেয়েছেন। পরদিন বৃহস্পতিবার কপি সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) গোলাম নবী জানান, সরকারি কর্মচারী হিসেবে কোনোভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জাড়ানোর বিধান নেই। অভিযোগের পর সহকারি শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে ১৬ আগস্ট কারণদর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সন্তষ্টজনক উত্তর না আসায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
———
গুরুদাসপুর থেকে আরো পড়ুন