শাহিন শাহকে (৪০) শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত গৃহবধূ হুসনেয়ারা (৩২)। গতকাল শনিবার রাতে ওই নারীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেম উদ্দিন।
নিহত শাহিন শাহ নাটোরের এক আইনজীবীর সহাকরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি নাটোর সদর উপজেলার দস্তানাবাদ গ্রামের মোজাহার আলী শাহের ছেলে। ওই নারী বড়াইগ্রামের জলন্দা গ্রামের কুয়েত প্রবাসীর স্ত্রী।
পুলিশ বলছে- স্বামী প্রবাসী হওয়ায় সুযোগে শাহিন শাহর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই নারী। শুক্রবার ওই নারীর বাড়ির উঠোনের টিউবওয়েলের কাছে ১০ ফুট মাটির গর্ত থেকে শাহিন শাহর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেসময় হুসনেয়ারা ও তার ছেলেকে আটক করা হয়। পরদিন শনিবার বিকেলে তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে মা ও ছেলে আদালতের কাছে জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, নিহত শাহিন শাহর সাথে গ্রেপ্তারকৃত নারীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তাদের প্রেমের সম্পর্কে ভাঙন শুরু হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন হুসনেয়ারা। সম্পর্কে ফাটল ধরায় শাহিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওই নারী।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বাড়ির উঠোনের টিউবওয়েলটি মেরামতের কথা বলে সেখানে ১০ ফুট গর্ত করিয়ে নেন। সম্প্রতি শাহিনকে বাড়িতে ডেকে ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ পান করিয়ে অচেতন করা হয়। এরপর শাহিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ছেলে আশরাফুলের সহায়তায় লাশটি ওই গর্তে ফেলে মাটিচাপা দেন হুসনেয়ারা।
নিহত শাহিন নাটোর আদলতের আইনজীবী আলী কদরের সহবারী ছিলেন। সোমবার থেকে শাহিন নিখোঁজ হলে গত বুধবার তাঁর বড় ভাই আক্তার হোসেন নাটোর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। শুক্রবার লাশ উদ্ধারের পর রাতে এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির আরক ভাই ফিরোজ শাহ বাদী হয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ও ছেলেকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের চাচাতো ভাই আনোয়ার শাহ জানান, সোমবার থেকে নিখোঁজ হলে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও শাহিনের সন্ধান পাননি তারা। মঙ্গলবার নাটোর সদর থানা ও র্যাব ক্যাম্পে অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব ও পুলিশ ওই নারীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাটির গর্ত থেকে মুখ, হাত-পা বাঁধা এবং গলায় দড়ি লাগানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে। তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।