
রাণীশংকৈল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা- ছবি মুক্ত প্রভাত
ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে গলা ছেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাণীশংকৈল থানায় সাধারণ ডায়েরী হয়েছে।
সাধারণ ডায়েরী সুত্রে জানা যায়, গত ২৪ জুলাই রাণীশংকৈল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন সময়ে উপস্থিত হন ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা। এসময় তিনি প্রধান শিক্ষিকার রুমে ডেকে নেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথকে।
এ সময় প্রধান শিক্ষিকা ছেলিমা সিদ্দিকা ও উপস্থিত কিছু ছাত্রছাত্রীর সামনে ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথকে উদ্যোশে করে বলেন, আমার ছেলে ইয়ামিনকে তুমি শ্রেণীকক্ষে কি বলেছো, সে ছোট লোকের বাচ্চা, বেটা তুমি জানানো আমি এলাকার ভাইসচেয়ারম্যান,তোমার গলা ছাটিয়া দিব,তোমাকে ১ মিনিটে ট্রান্সফার করিয়া দিবসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি প্র্রদান করে। সাধারণ ডায়েরীতে উল্লেখ্য করা হয়েছে এ ঘটনাটি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছেলিমা সিদ্দিকার সামনে ঘটেছে।তাকে স্বাক্ষী হিসাবে ডায়েরীতে অন্তভুক্ত করা হয়েছে।
তবে ঘটনাটি নিয়ে প্রধান শিক্ষিকা(ভারপ্রাপ্ত)ছেলিমা সিদ্দিকার নিকট জানতে চাইলে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান কর্তৃক সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথের গলা ছেটে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ভাইস চেয়াম্যানের ছেলেকে শ্রেণী কক্ষে বিভিন্ন ধরনের অপমান মুলক কথা বলেছে।
ভাইস চেয়ারম্যান এ জন্য ধীরেন্দ্র নাথকে আমার দপ্তরে ডেকে নিয়ে তার সাথে একটু কথাবার্তা হয়েছে। তবে ধীরেন্দ্র নাথকে হত্যার হুমকি বা গলা ছেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার মত কোন কথা বার্তা হয়েছে বলে তার মেমোরীতে নেই।
সাধারণ ডায়েরীতে আপনাকে স্বাক্ষী হিসাবে অনন্তভুক্ত করা হয়েছে প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার সামনে যা ঘটেছে আমি পুলিশের কাছে তাই বলবো। কারো জন্য বাড়তি কোন কথা বা মিথ্যা কথা বলতে পারবো না।
সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ বলেন, ভাইসচেয়ারম্যানের হমুকি থেকে বাচতেই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় ডায়েরী করেছি। ঘটনাটি পুলিশেই এখন তদন্ত করবে।
উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান সোহেল রানার দৃষি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি ঘটনা সাজিয়ে তার মানহানী করার উদ্যোশে ডায়েরী করা হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। তিনি বলেন, মূলত সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথের নিকট আমার ছেলেকে প্রাইভেট পড়ানো বাদ দেওয়ায় সে বিভিন্ন সময় ক্লাস রুমে আমার ছেলেকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে থাকে। গত মঙ্গলবারেও গালিগালিজ করার কারনে বিদ্যালয় গিয়ে প্রধান শিক্ষকের সামনে বিষয়টি পরিস্কার হওয়ার সময় শ্রেণী কক্ষের অন্যান্য বাচ্চাদের স্বাক্ষীতে দোষী সাব্যস্ত হয় ধীরেন্দ্র নাথ। এসময় ধীরেন্দ্র নাথ তার অসভ্য আচরণের জন্য দু:খও প্রকাশ করেন। বিষয়টি সেদিনেই মিমাংসা হয়েছে বলে ভাইসচেয়ারম্যান সোহেল রানা দাবী করেছেন।
সাধারণ ডায়েরীর তদন্ত কর্মকর্তা রাণীশংকৈল থানার উপ-সহকারী পরির্দশক(এসআই) এরশাদ আলী বলেন,জিডিটি তদন্তে ঠাকুরগাঁও আদালতের অনুমিত নিয়ে কাযর্ক্রম শুর করা হবে। আদালতের নির্দেশ পেলেই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করা হবে।