সিজারিয়ান অপারেশনের পর নাজমা বেগম (৩৮) নামের এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নাটোর শহরের মাদরাসা মোড় এলাকার আল-মদিনা হাসপাতালে বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি গোপন করতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে রাজশাহীতে রেফার্ড করেন।
প্রসূতি নাজমা নাটোর সদর উপজেলার লহ্মীপুর চোয়ারা গ্রামের আব্দুস সোবহানের স্ত্রী। নিহত নাজমার স্বামী সোবহান অভিযোগ করে বলেন, সন্তান প্রসবের জন্য স্ত্রীকে সকাল দশটার দিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান তিনি। তখনো তার স্ত্রী সুস্থ্যই ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সিজার করা হয়। এসময় তার স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
তিনি বলেন, অপারেশনের পর পরই স্ত্রীকে রক্ত দেওয়ার কথা জানান চিকিৎসক। তাৎক্ষণিক ৩ ব্যাগ ‘ও নেগেটিভ’ রক্ত যোগাড় করে দেন তিনি। তারপরও স্ত্রীকে বাঁচানো গেল না।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রসূতি নাজমার সিজারিয়ান অপারেশন করেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক সামিরা তাবাসসুম সাথী ও এনেসথেশিয়া চিকিৎসক রিয়াদুল ইসলাম। অপারেশনের পর পরই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন হয়। রক্ত দেওয়ার পরও প্রসূতি নাজমাকে স্বাভাবিক করতে পারেননি চিকিৎসক সাথী। পরে ওই হাসপাতালেই দুপুর ১ টার দিকে প্রসূতি নাজমা মারা যান।
নাজমার ভাতিজা কাউছার আহম্মেদ জানান, আল-মদিনা হাসপাতালে তার ফুফুকে ভর্তি করা হয়েছিল। ৩ মেয়ের পর এবার পূত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় সন্তানের মুখ দেখার আগেই মারা যেতে হলো।
তিনি বলেন, বিকেল ৩টার দিকে আল-মদিনা হাসপাতাল থেকে প্রসূতিকে নিয়ে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে চিকিৎসক সামিরা তাবাস্সুম সাথী এব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। ক্লিনিকের স্বত্বাধীকারি মো. আতাউর রহমান আল আলমিন ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করে বুধববার সন্ধ্যায় জানান, অপারেশনের সময় প্রসূতি নাজমার শরীরে ৫৬ শতাংশ রক্ত ছিল। তবে অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। মূলত অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণেই ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।