নাটোরে যুবলীগ নেতা মিঠুন আলীকে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্নের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ভোরে নাটোর সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন আহতের ভাই বাদশা আলী।
মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি দায়েরর পর পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিরা হচ্ছেন- শহরের বলারিপাড়া এলাকার মো. আশরাফ (৫০), একই এলাকার মহসিন আলী (৩১), কান্দিভিটা এলাকার ওবায়দুল সরদার (৪০), কানাইখালীর মো. রুমন (২৬) ও মিরপাড়ার নাসির উদ্দিন (২৭)।
গত রোববার রাত পৌনে নয়টার দিকে নাটোর শহরের ভবানীগঞ্জ মোড়ের আওয়ামী লীগের স্থানীয় কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নান্নু শেখের লোকজন ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন আলীসহ ছয়জনকে কুপিয়ে জখম করে। এসময় আতংক সৃষ্টি করতে কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষণ করা হয়।
ওই হামলায় মিঠুন আলীর ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাঁর মাথা, দুই হাত, দুই পা ও পিঠের নিচে গুরুতর জখম হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছিম আহম্মেদ জানান, যুবলীগ নেতা মিঠুনের ওপর হামলার ঘটনায় মিঠুনের ভাই বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটিতে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানকে ১ নম্বর আসমি করা হয়েছে। এ ছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্ত্তজা আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাক আলী, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক নান্নু শেখসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, যুবলীগ নেতা মিঠুনের ওপর হামলায় ঘটনায় তার কোনো যোগসূত্র নেই। রাজনৈতিক আক্রোশে তাঁকে আসামি করা হয়েছে। আইনগতভাবে মামলাটি মোকাবিলা করবেন তারা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন আজ দুপুরে বলেন, ভোরে মামলাটি গ্রহণের পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। মামলাটির তদন্ত চলমান আছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যহত রেখেছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ৫ আসামিকে নাটোর সদর আমলী আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মূলত নাটোর আওয়ামী লীগের রাজনীতি ঘিরে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের মধ্যে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তারই জেরে গত ১৬ এপ্রিল রমজান গ্রুপের জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নান্নু শেখকে কুপিয়ে যখম করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল সাংসদ শিমুলের সমর্থক যুবলীগ নেতা মিঠুন ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। ওই হামলার জেরে একই কায়দায় মিঠুনের ওপর হামলা চালিয়ে তার কব্জি বিচ্ছিন্ন করা হয়।