মাদারীপুরে ব্যবসায়ীদের দেনাদার-পাওনারের দ্বন্দ্ব ব্যবসায়ীসহ সুধীমহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে বলে জানা যায়।
অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের কারন বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসনের। দ্বন্দ্ব নিরসনে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগের কিছুটা সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস তদন্ত কমিটির।
জানা যায় ,মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও বনিক সমিতির সাধারণ সম্পদক মনিরুল ইসলাম তুষার ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করে কিছু ব্যবসায়ী। অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেন মনিরুল ইসলাম তুষার ভূইয়া।
পাল্টা পাল্টি অভিযোগের কারনে বিষয়টি মাদারীপুর জেলার ব্যবসায়ী মহলসহ সূধী মহলে ব্যাপকভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়। চেম্বার অব কমার্সের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ব্যাবসায়ীরা।
অন্যদিকে মিথ্যা অভিযোগের কারনে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তুষার ভূইয়া। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিতে এলে ব্যবসায়ীদের মাঝে দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
উক্ত তদন্ত কমিটি (১৩ জুলাই)বৃহষ্পতিবার বিকেলে এক বৈঠক বসে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় মাদারীপুর।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলামের ব্যবস্থাপনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, মাদারীপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টির সভাপতি হাফিজুর রহমান যাচ্চু খান, সহ সভাপতি বাবুলদাস বনিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অভিযোগ কারীবৃন্দ ব্যবসাীসহ অভিযুক্ত তুষার ভূইয়া বৈধকে উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ আলোচনা ও তথ্য প্রমানের যাচাই বাছাইয়ের পরে ঘটনার কিছু সত্যতা খুজে পায় তদন্ত কমিটি।
তবে কিছু অভিযোগের উপযুক্ত তথ্য প্রমানের অভাবে পুরোপুরী সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি। তবে সব সমস্যা তদন্ত সাপেক্ষে সমাধান করা সম্ভব বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি।
দ্রত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাবাদী তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি কিছু ব্যবসায়ী ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় খুশি হয়ে প্রশাসনে উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
তবে যে সকল ব্যবসায়ীদের সমস্যার এখনো সমাধান হয়নি তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন তারা। সঠিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে সকলের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান।
মনির হাওলাদার নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, সে তুষার ভুঁইয়ার কাছে ১৫ কোটি টাকা পাবেন। টাকা চাইতে গেলে তিনি বিভিন্ন টালবাহানা করেন।
তিনি ছাড়া আরও অনেক ব্যবসায়ী তুষার ভূইয়ার কাছে কোটি কোটি টাকা পাবেন বলে জানান ও অনেকের কাছে তথ্য প্রমান আছে,অনেকে সরল বিশ্বাসে দিয়েছে। সবাইকে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানান তিনি।
পাশাপাশি প্রশাসনকে এ সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেয়ায় ধন্যবাদ দেন।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম তুষার ভূইয়া বলেন, ব্যবসায়ীদের মাঝে লেনদেন থাকতেই পারে। প্রকৃতপক্ষে তার কাছে যারা টাকা পাবেন তাদের টাকা দেয়া হবে না এমন কথা কখনই বলা হয়নি। কিছু লোক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে ।
কোন ষড়যন্ত্র যেন কাজে না আসে সে বিষয়ে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগীতা চান তিনি। সঠিক সমাধানে আপত্তি নেই বলেও জানান তিনি। সুন্দর পরিবেশে সঠিক তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে বিচার করার জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হাফিজুর রহমান জাচ্চু খান বলেন, কিছু ব্যবসায়ী তুষার ভূইয়ার কাছে টাকা পাবে এমন অভিযোগ এনে তাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কারণ দর্শানোর জন্য তারা মনিরুল ইসলাম তুষার ভূইয়াকে চিঠি ইস্যু করেছিলেন তারা। বৈঠকে তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা ফেরৎ দিতে প্রশাসনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান তিনি।
স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, দেনা-পাওনা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশ কিছুদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব চলছে । সেই দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য জেলা প্রশাসনের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্বন্দ্ব নিরসনে তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে সঠিক সমাধান দেয়ার চেষ্টা চলছে। সমস্যাটির সঠিক সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি।