
ঘিওরে এপ্রোচ সড়ক ভাঙ্গন : সেতু ভাঙ্গন আতঙ্কে এলাকাবাসী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ধলেশ্বরী নদীর প্রবল স্রোতে ধসে যাচ্ছে উপজেলার পেঁচারকান্দা সড়কের ওপর নির্মিত সেতুর এপ্রোচ সড়ক দীর্ঘদিন যাবত ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু না করলে যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে সেতুটি।
ফলে এখানকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। ব্রিজের গোড়ায় মাটি না থাকায় যানবাহনসহ জনগণের যাতায়াতে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে তিনটি ইউনিয়নের ১৫-২০ হাজার লোক যাতায়াত করে থাকে।
এ ভাঙ্গন প্রতিরোধে গতবছর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হলেও আজ পর্যন্ত কোন স্থায়ী সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের ভেঙে যাওয়া অংশ এবং সেতুর গোড়ার মাটি ধসে পড়া অংশ দেখতে ভিড় করছে শত শত মানুষ।
সেতুর উত্তর পাশের গোড়ার মাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় সেতুসহ সংযোগ স্থলের পাকা সড়ক, ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যেতে পারে। সেতুটি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এখানকার মানুষ।
এছাড়া এ রাস্তা দিয়ে চলাচলরত পেঁচারকান্দা, চরবেনোরা, চরকুশুন্ডা, রামেশ্বরপট্টি, সড়কঘাটা, আশাপুর, কামারজাগী, টেপড়ি, সাইংজুরি, কাউটিয়া, বামনা, শোধঘাটাসহ ঘিওর ও সিংজুরি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের ১৫-২০ হাজার মানুষকে যাতায়াতে চরমদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মুিক্তযোদ্ধা আব্দুল সামাদ, আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ হাসান মুকুল ও ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, প্রায় ১৫টি গ্রামে প্রবেশের এটাই একমাত্র সড়ক। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, হাটবাজার, কৃষক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করে।
এই সেতু বা সড়ক ভেঙ্গে গেলে এখানকার মানুষ খুব সমস্যায় পড়ে যাবে। মাটির বস্তা ফেলে এ ভাঙ্গন সাময়িক রোধ করা হয়েছিল। চলতিবছর পূনরায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে উপজেলার পেঁচারকান্দা হাট সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর ওপর ১০০ দশমিক ১০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজটি ১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়।
বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়াল খান বলেন, গত ২ বছর আগে বাঁশের খুটি আর মাটির বস্তা দিয়ে সাময়িক এ ভাঙ্গন রোধ করেছিলাম। এ বছর আবার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সাহেবের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ঘিওর উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এই ব্রিজকে আরো ২৫ মিটার বর্ধিত করা হবে। এতে প্রাক্কলন ব্যয় হবে প্রায় ৩ কোটি টাকা। সকল প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। সেতু বর্ধিত করা হলে এপ্রোচ রোড ভাঙ্গনের কোন শঙ্কা থাকবেনা।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হামিদুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে ভাঙ্গনের স্থান পরিদর্শন করেছি । এ ভাঙ্গনরোধে ব্রিজ এক্সটেনশনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি টেন্ডারের প্রক্রিয়ায় আছে। অতিদ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।