ইভটিজিংয়ের ভয় আর লজ্জা-শেষ পর্যন্ত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হতে বসেছে সাতক্ষীরার উপকূলের নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ১০ সেপ্টেম্বর বুধবার ৩ ছাত্রীর সাথে শারীরিক লাঞ্চিত’র ঘটনায় থমকে গেছে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।”
সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে যানা যায়, উপজেলা ও থানা ভবন হতে কয়েকগজ দুরে অবস্থিত নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। নারী শিক্ষার আলো ছড়াতে প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ অবদান রেখে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু এ বিদ্যালয়টিতে আসা ছাত্রীরা এখন ইভটিজিংয়ের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছে। বিদ্যালয়ে আসা ও যাওয়ার পথে বাখাটে থেকে শুরু করে বিভিন্ন উঠতি বয়সী ছেলেরা তাদেরকে অশ্লিল ভাষা ব্যবহার, বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেলে এসে ছাত্রীদের স্পর্শ করা, পোষাক ধরে টানাটানি প্রতিদিনের কর্মকান্ডে পরিণত হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের আসা আগ্রহ হারাচ্ছে সেই সাথে তাদের মানসিক বিকাশে বাধাগ্রস্থ করছে। এতে সংঙ্কা দিনে দিনে আরো বেড়ে চলেছে।
নাম না প্রকাশ করা কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, এভাবে চলতে থাকলে তাদের বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তারা নিরাপদে বিদ্যালয়ে আসতে চাই। কিন্তু ইভটিজিং নামের ব্যাধী তাদের ক্রমশয় গ্রাস করে ফেলছে। এতে ক্রমে শ্রেণিকক্ষগুলো খালি হয়ে যাচ্ছে। ছাত্রীসংখ্যা কমতে কমতে বাধ্য হয়ে স্কুল কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হতে বসেছে বিদ্যালয়টিতে।
কয়েকজন অভিভাবকরা বলেন, তারা বিদ্যালয়ে মেয়েদের পাঠিয়ে সবসময় দুচিন্তায় থাকেন। ছাত্রীদের যাওয়া আসার পথে এভাবে বাধা হতে থাকলে তারা মেয়েদের বিদ্যালয়ে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশীদ মুক্ত প্রভাতকে বলেন, বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পথে উত্যাক্তের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে ক্ষমতার পালাবদলের পর এই সমস্য আরো বেড়েছে। বিশেষ করে উপজেলা চত্বর থেকে ডক্টরস ডোর হতে বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা নির্জণ হওয়ায় এই সড়কে এসব দুর্ষকৃতিকারীরা উৎপেতে থাকে। এরা মেয়েদের গায়ে হাত দিচ্ছে, কারোর ওড়না ধরে টানছে। এতে করে আমরা খুব আতঙ্কে আছি। এরআগে ইউএনও এবং ওসি সাহেবকে বললে কিছু তৎপরতায় বন্ধ হলেও তা আবারও চরম আকার ধারণ করেছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির মোল্যা বলেন, স্কুল চলাকালে ইভটিজিং বন্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। শ্যামনগর থানা এলাকায় পুলিশ অপরাধ দমনে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে, “বিশেষজ্ঞদের মতে, ইভটিজিং শুধু একটি স্কুল নয়, পুরো সমাজের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়। সচেতনতা, আইন প্রয়োগ ও পারিবারিক মূল্যবোধ-সব মিলিয়েই হতে পারে সমাধান। তাই সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এরকম আরও অনেক স্বপ্ন হয়তো থেমে যাবে পথেই এমনটি মনে করছেন সচেতনমহল।”