৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মির্জাগঞ্জে পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে নারীর আকুতি

মির্জাগঞ্জে পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে নারীর আকুতি

মির্জাগঞ্জে ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমি ভূমিদস্যুদের হাত থেকে ফিরে পেতে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোসাঃ সুমি আক্তার নামের এক ভুক্তভোগী  নারী। গতকাল সোমবার বেলা ১২ টায় মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দেউলী গ্রামের মৃত কাঞ্চন হাওলাদার এর নাতনী মোসাঃ সুমি আক্তার। লিখিত বক্তব্যে সুমি আক্তার বলেন-  আমার মাতা মোসাঃ খাদিজা বেগম। আমার মাতা তার পিতা কাঞ্চন হাওলাদার এর মৃত্যুতে ওয়ারিশ সূত্রে ৫.৭৫ শতাংশ জমির মালিক হন।

উক্ত জমি দেউলী মৌজার ৬৬৭ নং খতিয়ানের ১৬৪২ নম্বর দাগের জমি বিভিন্ন নেতাকর্মীর মদদপুস্ট, ধুর্ত জমিখেকো লালু গাজীর পূত্র শাহআলম গাজী (৬০) এর কু-নজর পরে। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে স্থানীয় আওয়ামী সমর্থক গুন্ডা সন্ত্রাসীদের আগ্রাসনের মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদশর্ণ করে উক্ত তফসিলিও সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে।

মোঃ কাঞ্চন চৌকিদার ছাড়া তার অন্য দুই বোন নিলু বেগম ও আলেয়া বেগমকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসন ম্যানেজ করে তাদের জমি হস্তগত করে এবং দলিল করে দখল করে নেয় শাহ আলম গাজী। কাঞ্চন চৌকিদারকেও বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদশর্ণ করে তার জমি দখল করতে চাইলেও তিনি তা করতে না দেওয়ায় সেই থেকেই তার প্রতি ক্ষোভ ও জমির প্রতি লোভশুরু হয়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আর অভিযোগ করে বলেন,  বিগত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও জমি খেকো আওয়ামীলুটেরা কু-খ্যাত সন্ত্রাসী এই শাহআলম গাজীর আশ্রয়দাতা স্থানীয় ফ্যাসিস্টরা গা ঢাকা দিয়ে গোপনে শাহআলম গাজীকে মদদ দিয়ে আসছে । বিগত ১৭ বছরে অবৈধভাবে অর্জিত বিপুল পরিমান অর্থ সম্পদের মালিক এই শাহ আলম গাজী তার কুমতলব থেকে থেমে নেই।

আমি ও আমাদের পরিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে বিশ্বাসী হওয়ায় আমাদের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের শরনাপন্ন হই কিন্তু এই আওয়ামী লুটেরা ভয়াল সন্ত্রাসী শাহআলম গাজী তার অর্থ সম্পদের লোভ দেখিয়ে প্রশাসন ম্যানেজ করে এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের আপোষ বৈঠক অমান্য করে।

আমার পরিবার ও অন্যান্যদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কিন্তু আমরা আমাদের ন্যায্য সম্পত্তি কোন ভাবে হাত ছাড়া করতে রাজী না হয়ে চলতি বছরের গত ০৫ জুলাই আমরা আমাদের জমিতে ঘর তুলতে গেলে এই দুধর্ষ সন্ত্রাসী শাহআলম গাজী ও তার ছেলে আনোয়ার গাজী এবং তার নিজ স্ত্রী ও পুত্র বধুসহ স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায় এবং আমাদের উত্তোলিত ঘর ভাঙচুর করে।

পর ৬ জুলাই সকালে আমাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মির্জাগঞ্জ থানায় ৮-১০টি ধারা উল্লেখ করে নারী নির্যাতন, চুরি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ইত্যাদি বিষয়ে আমার পিতা মোঃ সুলতান মাহামুদ, মাতাঃ খাদিজা বেগম, ভাইঃ বাইজিদ হোসেন, স্বামীঃ ফারুক হোসেন, ভগ্নিপতিঃ মোঃ শহিদুল ইসলাম ও মোঃ সোহেল হোসেনসহ আমার সকল আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশ সহ ভয়ভীতি প্রদান করে আসছে। 

উল্লেখিত মিথ্যা মামলায় আসামী আমাদের স্বজনরা পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হওয়ায় মামলার গ্রেপ্তার এড়াতে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে পরিবারগুলো ব্যাপক আর্থিক দৈন্য দশায় ভুগে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শক্তি দেশ থেকে পলায়ন করলেও অন্যান্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মতো এই ভূমিদস্যু শাহ আলম গাজী তার অবৈধ অর্থের প্রভাব খাটিয়ে জাতীয়তাবাদী বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে এবং তাদের জমি জমা দখলের পায়তারা করেন।

সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন পর্যায়ে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসরা বিরোধী শান্তিপ্রিয় জনগণকে আমার মত হয়রানী করে যাচ্ছে। আমার ন্যায্য জমিতে অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমার স্বামী সংসার, স্বজনরা আজ ঘর ছাড়া।তাই আমি আপনাদের সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে উল্লিখিত দুর্ধর্ষ আওয়ামী সন্ত্রাসী শাহ আলম গং এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে আমার পরিবারকে মিথ্যা হয়রানূলক মামলা থেকে মুক্তি পেতে পারি এবং ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি ভূমি দস্যুেদের হাত থেকে  ফিরে পেতে পারি সেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানাই