২৯ আগস্ট, ২০২৫

সড়ক দুর্ঘটনায় মা হারা শিশুর পরিবারের পাশে ইউএনও

সড়ক দুর্ঘটনায় মা হারা শিশুর পরিবারের পাশে ইউএনও

সড়ক দুর্ঘনায় মা হারা শিশু ফারদিন (৬) ও ফকরুল ইসলামের (৫) পাশে দাঁড়িয়েছেন বাগমারা উপজেলা প্রশাসন। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিহত খয়মন বেগমের বাড়িতে গিয়ে তাদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন।

বুধবার সন্ধ্যায় বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম মা হারা শিশু ফারদিন ও ফকরুল ইসলামের খোঁজে তাদের বাড়িতে যান। এসময় তিনি শিশুদের বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। স্বজনদের কাছ থেকে দুর্ঘটনার বিবরণ শোনেন। মা হারা শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন ইউএনও।

স্বজনেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। শিশুদের জন্য স্থায়ী ভাবে কী করা যায় এই বিষয়ে অভিভাবকদের কাছে পরামর্শ চান। তারা যাতে ভালোভাবে বেড়ে ওঠতে পারে সে বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন সর্বদা মা হারা দুই শিশুর পাশে থাকবেন বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, মা হারা শিশুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি এঁর নজরে আসে। তিনি এতিম শিশু দুটির পাশে দাঁড়াতে এবং স্থায়ী ভাবে কিছু করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এছাড়া রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার শিশুদের খোঁজ খবর নেওয়ার নির্দেশ দেন। তাঁদের নির্দেশে তিনিী নিহত গৃহবধূ খয়মন বেগমের দুই শিশু সন্তানের খোঁজ নিতে এসেছেন। দুই শিশুর ভবিষ্যতের জন্য এক লাখ টাকা এফডিআর করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সে মোতাবেক বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শিশুসহ পরিবারটির অন্যান্য সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।

গত ২৪ আগস্ট সকালে উপজেলার হামিরকুৎসা-তাহেরপুর সড়কের রামরামায় ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যানের সংঘর্ষে খয়মন বেগমসহ দুজন নিহত হন। পরের দিন আরেকজন নিহত হন। ভ্যান থেকে ছিটকে প্রাণে বেঁচে যান তাঁর দুই ছেলে ফারদিন ও ফকরুল। নিহত খয়মন বেগম রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার চেউখালী গ্রামের আবদুল হান্নানের (৪০) স্ত্রী।

ওইদিন সকালে খয়মন বেগম অসুস্থ বাবাকে দেখতে পাশের পুঠিয়া উপজেলার পঁচা মাড়িয়া গ্রামে গিয়েছিলেন; সঙ্গে ছিল তাঁর দুই ছেলে। সেখান থেকে তাঁরা ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। আসার পথে রামরামা চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে।

এসময় খয়মন বেগমের সঙ্গে থাকা তাঁর দুই শিশু সন্তান ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে প্রাণে বেঁচে যায়।তবে ঘটনাস্থলে খয়মন বেগম ছাড়াও শহিদুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী মারা যান। একদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভ্যানের চালক উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের আক্কাস আলী (৪৭) মারা যান।

মা মারা যাওয়ার পর শিশু দুইটি অসহায় হয়ে পড়ে। মায়ের জন্য তারা কান্নাকাটি করে। বাবা, দাদা ও দাদি শিশুকে আগলে রাখার চেষ্টা করেন। তবে দাদা ও দাদি অসুস্থ হওয়াতে বাবাকেই বেশি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। মা হারা শিশু দুটির কান্না থামেনি, আতঙ্কও কাটেনি। বাবা ও এক প্রতিবেশীর কোলে থাকা অবস্থায় চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ দেখা যায়।

শিশুদের বাবা আবদুল হান্নান বলেন,ইউএনওর এই টাকা ছাওয়ালদের কাজে লাগবে, তাদের জন্য খরচ করবো, চিন্তা করা লাগবে না।