২৬ আগস্ট, ২০২৫

লুটের অস্ত্রে পুলিশ ক্যাম্পে ডাকাত দলের হামলা, পুলিশের পাল্টা গুলি

লুটের অস্ত্রে পুলিশ ক্যাম্পে ডাকাত দলের হামলা, পুলিশের পাল্টা গুলি

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে সদ্য চালু হয় একটি পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যদের উপর নৌ ডাকাত দলের সদস্যরা গুলি ও ককটেল হামলা চালিয়েছে। এ সময়ে আত্ম রক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে পুলিশ। ওরে বুকের মধ্যে শতাধিক গোলাগুলি হয়েছে। 

সোমবার বিকেল সোয়া পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত উপ গোয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ঘটনা ঘটে। 

ডাকাত দলের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো থানা থেকে লুট করা পুলিশ। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

জামালপুর এলাকার বাসিন্দা উজ্জ্বল দেওয়ান সন্ধ্যা সাড়ে আচ্ছা টিকে জানান, 'দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর বাড়িতে ঘুমিয়েছিলাম। আমার বাড়ির পাশে পুলিশ ক্যাম্প। বিকেলে প্রচন্ড গোলাগুলি শব্দে আমার ঘুম ভাঙ্গে। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি পুলিশ ও ডাকাত দলের মধ্যে গোলাগুলি চলছে। এতে আমাদের গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকা থমথমে হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ ভয়ে যার যার ঘরে অবস্থান করছেন। '

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেল পাঁচটার পর ৫-৬ টি দ্রুতগতির ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ ডাকাত নয়ন, পিয়াস ও রিপনের পক্ষের ৩০-৪০ জন সদস্য,। এ সময় ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা ঢাকার দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে নদীতে অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। প্রস্তুতির বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে ডাকার দলের সদস্যরা চাঁদপুরের বেলতলীর দিকে গিয়ে আড়াল হয়ে যায়।

কিছু সময় পর শুয়া পাঁচটার দিকে মাথায় হেলমেট পরে আগ্নেয়াস্ত্র, ছুরি, ককটেল নিয়ে ক্যাম্পের দিকে ছুটে আসে। ক্যাম্পে থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে একের পর এক ককটেল ও গুলি ছুটতে থাকে ডাকার দলের সদস্যরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালান। এ সময় ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় একশটি এবং পুলিশের পক্ষ থেকে বৃষ্টির মতো গুলি ছোরা হয়। আধা ঘন্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে তিক্ত না পেরে সম্ভব উনি ছয়টার দিকে তলার নিয়ে মতলবের দিকে চলে যায় হামলাকারীরা। 

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের মেঘনা নদী ও শাখা নদীতে অবৈধ বালু মহল পরিচালনা, নুরজাহানের চাঁদাবাজি করে আসছে নয়ন, পিয়াস, রিপন ও লালু বাহিনীর সদস্যরা। গত এক বছরের নদীতে কয়েক দফা গোলাগুলিতে তাদের হাতে খুন হন অন্য ডাকাত পক্ষের সরদার বাবলা। একমাস আগে বালু উত্তোলনের বাধা দিতে গিয়ে গুলিতে নিহত হন আব্দুল মান্নান ও হৃদয় আহমেদ নামের আরো দুজন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পরিস্কার চালু করা হয়। গজারিয়া থানার ইনচার্জ (ওসি) দুজন পরিদর্শক সহ ৪০জন পুলিশ সদস্য দিয়ে এ ক্যাম্প শুরু করা হয়।

নৌডাকাত বাহিনীর প্রধান বাবলা খা ঘটনার সময় ওই পুলিশ ক্যাম্পে ছিলেন গজারিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার আলম আজাদ। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, 'নৌ ডাকাত নয়ন, পিয়াস ও রিপনের নেতৃত্বে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পাঁচ-ছয়টি ট্রলার নিয়ে আমাদের উপর হামলা করা হয়। হামলাকারীদের দলে ৪০ জনের উপরে সদস্য ছিল। তারা দেশী বিদেশী অস্ত্রসহ প্রস্তুতি নিয়ে হামলা করেছিল। তাদের হাতের অস্ত্রগুলো থানা থেকে লুট করা। আমাদের লক্ষ্য করে শতাধিক গুলি করেছে। আমাদের দিক থেকে ১৯ টির মত গুলি করা হয়েছে। আমাদের কোন পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। তবে কোন সন্ত্রাসী আহত হয়েছে কিনা তা আমরা বলতে পারব না। '

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ শামসুল আলম সরকারের দাবি, পুলিশ ক্যাম্প হওয়ার পর নৌ ডাকাটা আর সুবিধা করতে পারছে না।  এত তারা পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত। তিনি বলেন, 'তবে আমরা সাধারণ মানুষকে বলতে চাই, পুলিশ তাদের পক্ষে রয়েছে। পরী সদস্যরা তাদের পেশাদারী সঠিকভাবে পালন করবে। কোন ডাকাত সন্ত্রাসীকে পুলিশ ভয় পায় না। গোয়াগাছিয়ার সব ডাকাত সন্ত্রাসীকে নির্মূল করে অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়া না হবে।  আনা হবে।