সাতক্ষীরার তালা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সেমাই কারখানা দখলের চেষ্টা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম দাদু ভাই তালা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার লিপি, শপিং ভ্যালী ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর।
জেসমিন আক্তার লিপি জানান, দেশের বিভিন্ন জেলায় সুপরিচিত শপিং মল ও খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শপিং ভ্যালী ২০২২ সালে তালা উপজেলার আটারই গ্রামে ১৩ শতক জমির উপর “শপিং ভ্যালী সেমাই কারখানা” প্রতিষ্ঠা করে।
মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন রিপনের কাছ থেকে জমিটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকায় ১০ বছরের জন্য লিজ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ইমরান হোসেনের নিকটস্থ আরও ২০ শতক জমি ক্রয় করে কোম্পানির নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। চার বছর ধরে উক্ত জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়ে আসছে।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি তালা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কারখানাটি দখলের চেষ্টা করছেন। তিনি নিয়মিত চাঁদা দাবি করেন এবং তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হত্যার হুমকি দেন। গত ১৩ জুলাই সকাল ১০টায় তিনি কারখানায় প্রবেশ করে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এসময় তিনি কোম্পানিতে ভাঙচুর চালান, কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ ও কর্মীদের হত্যার হুমকিসংক্রান্ত কল রেকর্ডিং কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করেছে। জেসমিন আক্তার লিপি আরও জানান, এ ঘটনায় তালা থানায় অভিযোগ দিলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তা গোপন করার চেষ্টা করা হয়। পরে ভিডিও ও অডিও প্রমাণের ভিত্তিতে জিডি এবং আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু মামলা করার পর রফিকুল ইসলাম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুরো কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। ফলে প্রায় ৩০ জন শ্রমিক-কর্মচারী চরম সংকটে পড়েছেন এবং উৎপাদন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে কর্মীরা গভীর আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তালা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম দাদু ভাইয়ের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক অ্যাড. কামরুজ্জামান ভুট্টো বলেন, “দলের মধ্যে কোনো দখলদার বা চাঁদাবাজের ঠাঁই নেই। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”