বুধবার সকাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরুর কথা ছিল। তবে এদিন হঠাৎই স্থগিত করা হয় মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম। তবে নতুন করে আবারো মনোনয়নপত্র বিতরণের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী রোববার সকাল ১০টা থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম নতুন করে শুরু করা হবে। এটি চলবে আগামি ২৬ আগস্ট বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বুধবার বিকেলে রাকসুর নির্বাচন কমিশনারদের এক জরুরী বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. আমজাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মনোনয়নপত্র বিতরণের বিষয়টি জানানো হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট সকাল ১০ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। ২৭ ও ২৮ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে ২ সেপ্টেম্বর। এছাড়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
তবে নির্বাচন সংক্রান্ত পরবর্তী তারিখগুলোতে কোনো ধরণের পরিবর্তন আনা হয়নি। তফসিল অনুযায়ী- ৪ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতিটি আবাসিক হলে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
তফসিল অনুযায়ী, বুধবার বুধবার সকাল ৯টা থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলে তা হয়নি। মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমধ্যাম ফেসবুকে রাকসুর সমালোনা শুরু হয়। ফলে নতুন করে আবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় নির্ধাণ করা হয়েছে।
ছাত্র নেতা বলছেন, আকষ্মিক মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত ষড়যন্ত্রের শামিল। বিষয়টি নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, রাকসু হওয়ার পথে নতুন একটি বাধা হয়েছিল মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম স্থহিত করা। এটা এক ধরণের ষড়যন্ত্র। যাই হোক ১৫ সেপ্টেম্বরই রাকসু অনুষ্ঠি হবে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটলে সংকট আরো বাড়বে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানাগেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মোট ১৪টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সবশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এর পর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাকসু নির্বাচনের দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
তার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করে। তবে সে অনুযায়ী কাজের অগ্রগতি হয়নি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোমবার বিকেলে নির্বাচনের বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে তপসিল ঘোষণা করে।