২০ আগস্ট, ২০২৫

ধুনটে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের পাশে ছাত্রদল

ধুনটে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের পাশে ছাত্রদল

অসহায় অন্তঃসত্ত্বা মায়ের পাশে দাড়িয়েছে বগুড়ার ধুনট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। রক্ত, অপরাশেন ও চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা করেছে ছাত্রদল নেতারা। নিরাপদে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই মা।

জানা যায়, সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাইশা এলাকার যমুনা নদী তীরের মেয়ে মালা খাতুন। দরিদ্র পিতা মারা গেছেন অনেক আগেই। মা জীবিকা নির্বাহ করেন অন্যের বাড়িয়ে কাজ করে।

ভালবেসে এক পোশাক শ্রমিকের হাত ধরে সংসার জীবন শুরু করেন মালা। কিন্তু সংসার সুখের হয়নি। শ্বশুর বাড়ির স্বজনরা মেনে নেয়নি তাকে। এক পর্যায়ে গর্ভে সন্তান ধারন করেন মালা। এরপর তাকে বিধবা মায়ের বাড়ি রেখে যায় প্রেমিক স্বামী। তারপর থেকে স্বামীও আর খোজ নেয়নি তার।

সোমবার সকালে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা মালা খাতুন। বিধবা মাকে তাকে চিকিৎসার জন্য ধুনট হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক মালা খাতুনের দ্রুত সিজারিয়ান অপারেশনের পরামর্শ দেন। কিন্তু এরজন্য প্রয়োজন ২ ব্যাগ রক্ত এবং চিকিৎসার ব্যয় মেটানোর টাকা।

বিধবা মা নিরুপায় হয়ে হাসপাতালের অদূরে ধুনট সরকারি কলেজ গেটে বসে কাঁদছিলেন। কি ভাবে তিনি রক্ত ম্যানেজ করবেন? কি ভাবে এত দ্রুত টাকা ম্যানেজ করে মেয়ের সিজারিয়ান অপারেশন করাবেন। বিষয়টি জানার পরে এগিয়ে আসে ধুনট সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। বিধবা মাকে আস্বস্ত করেন তারা, বোনের দায়িত্ব নিবে তার ভাইয়েরা।

ছাত্রদল নেতারা অন্তঃসত্ত্বা মালা খাতুনকে ভর্তি করেন ধুনট হাসপাতাল এলাকার শুভ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ম্যানেজ করেন ‘বি’ পজিটিভ দুই ব্যাগ রক্ত। এরপর অপারেশনের মাধ্যমে মালা খাতুন জন্ম দেন ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান। অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুর ঔষধপত্র কিনে দেন ছাত্রদল নেতারা। পরিশোধ করেন ক্লিনিকের বিল।

মানবিক এ কাজে অংশ নেয় ধুনট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মিলন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা শান্ত মিয়া, শাকিল আহমেদ, রিহাদ, দেলোয়ার হোসেন ও মারুফ হাসান।

ধুনট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মিলন মিয়া জানান, মানবিক কাজের অংশ হিসেবে আমরা একজন বিধবা মায়ের চোখের পানি দেখে তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে, যিনি আমাদের বোনের মত, ভাই হিসেবে তার বিপদে আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি। আগামীতেও মানবিকে কাজে আমরা বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকবো।

অন্তঃসত্ত্বা মালা খাতুন ছাত্রদল নেতাদের ভাই সম্মোধন করেন বলেন, ভাইয়েরা পাশে ছিলো বলে আমার সন্তান পৃথিবীর আলো দেখেছে। আমি ও আমার সন্তান এখন সুস্থ্য আছি