সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতবাড়ী-শাহজাহানপুর কাঁচা সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চরম অবহেলার শিকার। প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
সামান্য বৃষ্টিতেই এই গর্তগুলো কাদা-পানিতে পূর্ণ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগে পড়ছেন ইউনিয়নের অন্ততঃ ৮টি গ্রামের সাধারণ মানুষ।
এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন বেতবাড়ী, পূর্ব সাতবাড়ীয়া, বন্যাকান্দি, রামকান্তপুর, বেতকান্দি, ছোট লক্ষীপুর, বড় লক্ষীপুরসহ আশেপাশের ৮টি গ্রামের হাজারো মানুষ হাটে-বাজারে, স্কুল-কলেজে এবং জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু রাস্তার করুণ দশার কারণে শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী এবং রোগীদের চলাফেরা এক প্রকার দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন, সাইফুল ইসলাম, দেলখোশ বলেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়। বৃষ্টির দিনে তো বের হওয়াই যায় না। কাদা আর গর্তে এই পথে চলাচল করা যায় না। তারা জানান, পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের কাছে বহুবার আবেদন করা হলেও তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিগত ১৫ বছরে মাত্র ১-২ বার সামান্য মাটির কাজ করা হয়েছিল, যা কয়েক মাসের মধ্যেই বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫বছর আগে এলজিইডি’র উল্লাপাড়া অফিস থেকে রাস্তার বন্যাকান্দি মোড় থেকে ১ কিলোমিটার অংশ পাকা করা হয়। কিন্তু চলতি বছর ভারী বর্ষণের ফলে সেই পাকা অংশও ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। আর বাকি ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার অবস্থা এখন আরও ভয়াবহ। মাঝে মাঝে হালকা যানবাহন চলতে গিয়ে গর্তে পড়ে যায় এবং যাত্রীদের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। চালকদের রাস্তার পাশের লোকজনকে ডেকে গাড়ি উঠাতে হয়।
এ বিষয়ে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মোঃ আব্দুস ছালাম বলেন, চলতি বছর ভারী বর্ষণের ফলে এই রাস্তাটি খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এই পথ দিয়েই স্থানীয়রা প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকেন। বহুবার চেষ্টা করেছি কাজ শুরু করতে, কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় কিছু করা সম্ভব হয়নি। এলজিইডি অফিসে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু অফিস কর্তৃপক্ষ এখনো কাজ শুরু করেনি।
এলজিইডি উল্লাপাড়া কার্যালয়ের উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, রাস্তার দুরবস্থার কথা আমরা জানতে পেরেছি। কিছু অংশ ইতোমধ্যে পাকা করা হয়েছে। বাকি অংশের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রæত কাজ শুরু করা হবে।
এদিকে এলাকাবাসী দ্রুত এই কাঁচা রাস্তাটি পুরোপুরি পাকা করার দাবি জানিয়েছে। তারা বলছেন, এটি শুধু একটি রাস্তা নয় বরং আটটি গ্রামের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সরাসরি জড়িত একটি পথ। অবিলম্বে রাস্তাটি পাকা না হলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।