৩১ জুলাই, ২০২৫

দেশের প্রথম ৮ ডাকটিকিট যেভাবে প্রকাশ পেল

দেশের প্রথম ৮ ডাকটিকিট যেভাবে প্রকাশ পেল

ডাকটিকিট দিবস। ৮টি ডাকটিকিট প্রকাশের মাধ্যমে যেভাবে এই দিবসটি দেশের ইতিহাস হলো—সেই কথা উঠে এলো রাজশাহীর এক গল্প আড্ডায়। লন্ডনপ্রবাসী ভারতীয় বাঙালি শিল্পী বিমান মল্লিক বাংলাদেশের প্রথম সেই আটটি ডাকটিকিটের নকশা প্রণয়ন করেছিলেন।

বিমান মল্লিকের আঁকা ৮টি ডাকটিকিট বিশ্বে ব্যপকভাবে বাংলাদেশের অস্তিত্বর জানান দেয়। ৭১ সালের ২৯ জুলাই বাংলাদেশের অভ্যান্তরে এবং বাইরে থেকে এই ৮টি ডাকটিকিট একযোগে প্রকাশ করা হয়। সেই থেকে এ দিনটিকে ডাকটিকিট দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

ইতিহাস খচিত দেশের প্রথম ডাকটিকিট তৈরির গল্প তুলে ধরেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বনি আদম। মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় দিনটি উদযাপন করে বরেন্দ্র ফিলাটেটলিক সোসাইটি। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন বনি আদম।

যেভাবে ডাকটিকিট প্রকাশ করা হলো
অধ্যাপক বনি আদম বলেন, স্বাধীন বাংলদেশের এসব ডাকটিকিট প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয় ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছিল হাউজ অব কমন্সের হারকর্ট কক্ষে। বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ডাকটিকিট প্রদর্শনের উদ্যোগ নেন। হাউজ অব কমন্সের হারকর্ট কক্ষে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রায় সব দলের নেতৃস্থানীয় সদস্য ছাড়াও প্রায় ৪০ জন সাংবাদিকের উপস্থিতি ছিল সেদিন। 

এর পর একই বছরের ২৯ জুলাই মুজিবনগর পোস্ট অফিসে মওদুদ আহমদ, লন্ডনে হাউস অব কমন্সে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও কলকতার বাংলাদেশ মিশনে এম হোসেন আলী একযোগে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওই ৮টি ডাকটিকিট প্রকাশ করেন।

ডাকটিকিটে যেসব নকশা ছিল
একাত্তরে প্রকাশিত ওই ৮টি ডাকটিকিটে নকশা হিসেবে ছিল বাংলাদেশের মানচিত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণহত্যা, সাড়ে সাত কোটি বাঙালি, স্বাধীনতার পতাকা, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও ‘বাংলাদেশকে সমর্থন দিন” লেখা। বাংলাদেশের অস্তিত্বকে জানান দেওয়া এসব ডাকটিকিট বহির্বিশ্বে ব্যপক আলোরন সৃষ্টি করে। ডাকটিকিট দিবসে সেসব গল্পই বলছিলেন অধ্যাপক বনি আদমরা।

ডাকটিকিট দিবসের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক ও বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক উদয় শংকর বিশ্বাস, ডাকটিকিট সংগ্রাহক খোশবর আলী, ডাকটিকিটের নকশাবিদ ও বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সুমন্ত কুমার প্রমুখ।