২৩ জুলাই, ২০২৫

আত্মীয় বাড়ি যাওয়ার পথে একই পরিবারের ৭ জনসহ নিহত ৮

আত্মীয় বাড়ি যাওয়ার পথে একই পরিবারের ৭ জনসহ নিহত ৮

ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৭সদস্যসহ ৮জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬জনই নারী। ঘটনাস্থলে ৫জন ও হাসপাতালে নেওয়ার পরে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়। বুধবার সকাল দশটার দিকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার সীমান্ত অংশের আইড়মারী এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। 

দুর্ঘটনার পর দুপুর ১২টা পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয় মহাসড়কে। ফায়ার সার্ভিসের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, নাটোর ও বনপাড়া হাইওয়ে থানার সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালায়। লাশ উদ্ধার করে বনপাড়া হাইওয়ে থানায় নেওয়া হয়েছে। 

নিহতরা হলেন, মাইক্রোচালক সাহাবুদ্দিন (৩৫), যাত্রী একই পরিবারের ইতি খাতুন (৪০), জাহিদুল ইসলাম (৬৫), সেলি বেগম (৬০), আঞ্জুমানয়ারা (৭৫), আন্না খাতুন (৬০), আনু বেগম (৫৫) ও সীমা খাতুন (৩৫)। নিহতদের মধ্যে সীমা খাতুনের বাড়ি কুষ্টিয়ার মেহেরপুরে। অন্য ৭জনের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামে।

নিহত মাইক্রো চালক সাহাবুদ্দিনের মামাতো ভাই ধর্মদহ গ্রামের বাসিন্দা হাসিবুল ইসলাম বলেন, দৌলতপুর থেকে সিরাজগঞ্জে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য সাবুদ্দিনের মাইক্রোবাসটি ভাড়া করা হয়েছিল। একই পরিবারের ৭জন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ওই মাইক্রোবাসে রওনা হন। একই গ্রামের ৭ ব্যক্তির মৃত্যুর খবরে ধর্মদহগ্রামে চলছে শোকের মাতম।  

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ধর্মদহ গ্রাম থেকে ছেড়ে আসা একটি মাইক্রোবাস নোহা (ঢাকা মেট্রো-চ ১৩-৯৭৯২) যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জে আত্মীয় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহা সড়কের আইড়মাড়ি এলাকায় পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাকের (ঢাকা মোট্রো-ট ২৪-৪৮৬৪) মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৫জন নিহত হন। নিতদের মধ্যে ৬জনই নারী। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরো তিনজন। নিহতরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাইক্রোবাস যোগে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছিলেন একই পরিবারের ৭জন। আইড়মারী ব্রিজের কাছে এলে কিছু বুঝে উঠার আগেই বেপরোয়া গতির একটি ট্রাক চলন্ত মাইক্রোবাসের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুমড়ে মুচড়ে যায় মাইক্রোবাসটি। নিহতদের রক্তে ভিজে যায় মহাসড়ক। নিহতদের মধ্যে অন্তঃনারী রয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাঈল হোসেন জানান, সকাল দশটার কিছু পরে খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। ফায়ারকর্মীদের সহায়তায় লাশগুলো উদ্ধার করে হাইওয়ে থানায় নেওয়া হয়েছে। এখন পরিচয় নিশ্চিতের কাজ করছেন তারা। তাছাড়া দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। দুইঘন্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বলেন, দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তিনি। মাইক্রোবাসের নিহত যাত্রীরা একই পরিবারের সদস্য। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলেই পরিবারের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।