৭ জুলাই, ২০২৫

শিক্ষকদের বেতন গ্রেড নিয়ে সুখবর

শিক্ষকদের বেতন গ্রেড নিয়ে সুখবর

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষকের বেতনস্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার প্রক্রিয়া সক্রিয়ভাবে বিবেচনাধীন রয়েছে। শনিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক চিঠিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ওই চিঠিটি উপপরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষা অধিপ্তরের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়ে সরকারের কেনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই। একারণে বিষয়টি সরকার আন্তরিকভাবে বিবেচনা করছে।

তিনি আরো বলেণ, ‘আমরা জানতে পেরেছি একটি গ্রুপ এই প্রমোশনকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজিতে জড়েয়ে পড়েছে। তািই সাধারণ শিক্সকদের এসব প্রতারণা থেকে রক্ষা করার জন্য আমরা দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে এই পত্র জারি করি। আমরা আশা করি, এরপর থেকে কোনো প্রধান শিক্ষক বিপথগামী গ্রুপের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হবেন না।’

মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়ে আমরা অধিদপ্তর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। সেখান থেকে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে বাকি কাজ শেষ করে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু সময় লেগে যেতে পারে ‘

চিঠিতে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্চে যে, রিট পিটিশন নম্বর-৩২১৪/২০১৮ এর বিপরীতে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১১তম গ্রেড থেকে ১০ গ্রেডে উন্নীতকরণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রায় বাস্তবায়নে সম্মতি দিয়েছে। অবশিষ্ট প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেড বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।’

শিক্ষকরা জানান, শুধু রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি ছিল, দেশের সব সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেড বাস্তাবায়ন। এছাড়া সহাকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১১তম গ্রেডে বাস্তবায়ন। আমাদের দাবি, সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ৪৫জন রিট আবেদনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অফিশিয়াল গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করাসহ তিনটি নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এর বিরুদ্ধে লিভ টু আফিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যা ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারী খারিজ হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে একই বছর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ।

এদিকে অধিদপ্তরের অফিস আদেশে বলা হয়, ১০ গ্রেড বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে কতিপয় স্বার্থন্বেষী মহল প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। 

বিষয়টি অনাকাঙ্খিত এবং ফৌজদারি অপরাধের শামিল। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কোনোরূপ আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ করা হলো। চাঁদাবাজি বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণকারীদের নিকটস্থ থানায় সোর্পদ করার জন্য নির্দেশ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।