৫ জুন, ২০২৫

নিখোঁজের সাত দিন পর টয়লেটের ট্যাংকিতে মিলল রাজমিস্ত্রির মরদেহ

নিখোঁজের সাত দিন পর টয়লেটের ট্যাংকিতে মিলল রাজমিস্ত্রির মরদেহ

নিখোঁজের সাত দিন পর টয়লেটের সোকওয়েল থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় উদ্ধার করা হলো রাজমিস্ত্রী রাশিদুল ইসলাম রাসুর (৩৫) মরদেহ। ঘটনাটি উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের ভয়নগর গ্রামের।

উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টায় অর্ধগলিত অবস্থায় রাশিদুলের লাশ উদ্ধার করেছে। রাশিদুল এই গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে। 

আবু সাঈদ অভিযোগ করেন, রাশিদুল ইসলাম গত শুক্রবার (৩০ মে) এশার আযানের পর একটি অজ্ঞাত ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর কোন খোঁজ ছিল না। পরিবারের লোকজন বিভিন্নস্থানে তাদের আত্মীয় স্বজন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সন্ধান পাননি রাসুর। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৯ টার দিকে তাদের পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোকজন পচা গন্ধ অনুভব করে। পরে তারা অনুসন্ধান করে রাসুর বাড়ি থেকে কিছু দূরে একই গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের পরিত্যক্ত বাড়ির টয়লেটের সোকওয়েল থেকে এই গন্ধের উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করে। পরে তারা রাশিদুলের বাড়িতে খবর দেয়। 

রাশিদুলের বাবা আরও জানান, তারা এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান কথিত আব্দুস সালামের টয়লেটের সোকওয়েলে একটি বস্তা ঢুকানো রয়েছে। তারা বস্তার মুখ খুলে রাশিদুলকে সনাক্ত করেন। এরপর উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। কথিত আব্দুস সালামের বাড়িতে অনেকদিন ধরে কেউই থাকেন না।  রাশিদুলের পরিবারে স্ত্রী ৬ বছর বয়সের মেয়ে (রাফিয়া) ও ৫ মাস বয়সী একটি ছেলে (ইউসুফ) রয়েছে। রাশিদুল এলাকায় অত্যন্ত ভালো মানুষ হিসাবে পরিচিত ছিল। কেউ তাকে হত্যা করতে পারে এমনটা তারা ভাবতেই পারেন না। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাশিদুল ইসলাম রাসুর বাড়িতে গেলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন ও বাবা মা। সুমাইয়া খাতুন  কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, তার ভালো স্বামীটিকে ফোনে ঢেকে নিয়ে ঘাতকরা হত্যা করে বস্তায় ভরে পায়খানার মলের ট্যাংকিতে ভরে রেখেছিল। স্বামীকে হারিয়ে কীভাবে তিনি এখন তার দুই সন্তান প্রতিপালন করবেন এ নিয়ে চরম দুঃচিন্তায় পড়েছেন তিনি। সুমাইয়া তার স্বামীর হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন। 

উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রাশিদুল কান্ডের সঙ্গে কারা জড়িত থাকতে পারে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত তার বাবা মা ও স্ত্রী কিছুই বলতে পারছেন না। কীভাবে রাশিদুল মারা গেল তা ময়না তদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া নিশ্চিত করে বলা যাবে না। রাশিদুলের পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।