১ মে, ২০২৫

অবৈধ ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় বিবর্ণ ধানক্ষেত

অবৈধ ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় বিবর্ণ ধানক্ষেত

বগুড়ার ধুনটে ২ কৃষকের প্রায় দুই বিঘা জমির আধাপাকা বোরো ধান ইট ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধানের ক্ষতি হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 

বুধবার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানা পুলিশ ও সংবাদ কর্মীদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের তিন ফসলি জমিতে গ্রামীন ব্রীক্স নামে একটি ইট ভাটা রয়েছে। সরকারি নিয়ম-নীতি না মেনে গড়ে ওঠা এই ভাটার কারণে প্রতি বছরই ক্ষতির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষি ও পরিবেশ। চলতি মৌসুমে ওই ইট ভাটা সংলগ্ন জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ও ইসমাইল হোসেন। এরমধ্যে রফিকুলের ৩০ শতক ও ইসমাইল হোসেনের ২৮ শতক। 

চলতি বছরের জন্য তাদের ভাটায় ইট পোড়ানো কার্যক্রম কয়েক দিন আগে বন্ধ করার পর হঠাৎ ভাটার চিমনি দিয়ে বিষাক্ত এবং দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়া বের হতে থাকে। প্রথক দিকে ক্ষয়ক্ষতি তেমন বোঝা না গেলেও ধীরে ধীরে কৃষকেরা দেখতে পান তাদের সবুজ খেতের ধানগাছ ধোঁয়ার কারণে লালচে হয়ে গেছে। পাতা কুঁকড়ে গেছে। ধানের শিষ পরিণত হয়েছে চিটায়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষিবীদ জানান, সাধারণত কয়েকটি চুল্লিতে আগুন রেখেই ভাটা বন্ধ করার নিয়ম। যদি একবারেই ভাটার সব চুল্লিতে আগুন বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে চিমনি দিয়ে প্রচুর পরিমাণ ভারী সালফার ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। সেই ভারী সালফার গ্যাস খুব বেশি ওপরে যেতে না পেরে দ্রুত নিচের দিকে আসতে থাকে এবং কাণ্ড ও পাতায় ঢুকে ফসল ও গাছ নষ্ট করে দেয়। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা অভিযোগ করেন, ইট ভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসর কারণে তাদের জমির ধানে চিটা হয়ে গেছে। এতে লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন ব্যয় তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। আর মাত্র ১০-১২ দিন বাদেই ধান কাটা শুরু করব। এই সময় এমন ঘটনা ঘটল। আমরা চাই ভাটার মালিক আমাদের ক্ষতিপূরণ দিক। আমরা এলাকায় ইট ভাটা দেখতে চাই না।

ভাটা মালিকদের পক্ষে মেসার্স গ্রামীন বিক্সের অংশীদার গোবিন্দপুর গ্রামের গোলাম রব্বানী বলেন, ইট ভাটার ধোঁয়ায় ধানের ক্ষতি হয়নি। জমির ধান পেকে গিয়ে ওই রকম হয়েছে। তবে ভাটার খোলার তাপে ধানের পাত কিছুটা শুকিয়ে গেছে। মুলত পারিবারিক বিরোধের জের ভাটা নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।  

ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ছামিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের লিখিত অভিযোগ নিজ কার্যালয়ে গণশুনানি করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা করা হবে।