হাটের ভেতরের সরকারি একটি জমি ২০ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় হাটের মাছ বাজার সংলগ্ন ওই জমিতে বর্তমানে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। উপজেলা প্রশাসন নোটিশের মাধ্য স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দিলেও তা মানছেন না দুই ব্যবসায়ী।
সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি জমিতে রাতের আঁধারে নির্মাণ কাজ অব্যহত রেখেছেন অভিযুক্ত আব্দুল মজিদ ও সজল উদ্দিন। তারা পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারের ব্যবসায়ী ও বাজারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
নাম প্রকাশ না করার সত্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ সরকারি ওই জমিতে প্রায় ১৮ বছর ধরে টিনশেড ঘর নির্মাণ করে গোখাদ্যের ব্যবসা করছিলেন। সম্প্রতি ওই জমিটি খুব গোপনে তিনি ২০ লাখ টাকায় তার ভাগনে মুদি ব্যবসায়ী সজল উদ্দিনের কাছে পজিশন বিক্রি করেন। এরপর থেকে সপ্তাহখানেক ধরে সজল ওই জমিতে ইটের পাকা স্থাপনা নির্মাণ শুরু করায় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
গুরুদাসপুর পৌর ভূমি অফিস জানিয়েছে, পৌর শহরের চাঁচকৈড় মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ২০ বর্গমিটারের জমিটি ২২৩/৬-৭ কেস মূলে একসোনা হিসেবে লীজ নিয়ে ব্যবসা করছিলেন আব্দুল মজিদ নামের এক ব্যবসায়ী। প্রতি বছর লীজ নবায়নের নিয়ম রয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সোবহান মণ্ডল জানান, ষাটের দশকে চাঁচকৈড় বাজারের ওই জমিটি একটি ক্লাবের অধিনে ছিল। সেখানে সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতেন ক্লাবের সদস্যরা। তবে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আব্দুল মজিদ ওই জমিটির একটা অংশ ভোগ দখল করছিলেন। পরবর্তীতে ২০০৬-৭ সালে তিনি নিজের নামে লীজ গ্রহণ করেন।
২০ লাখ টাকায় পজিশন ক্রয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে সজল বলেন, দোকানের ওই জমিটি তারা টাকার বিনিময়ে ক্রয় করেননি। তবে আব্দুল মজিদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে পাকা ইট দিয়ে সংস্কার কাজ করছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লীজ গ্রহীতা আব্দুল মজিদের সাথে ক্রেতা সজলের ভাই সাহাবুদ্দিনকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে চেষ্টা তদবির করতে দেখা গেছে।
ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ সরকারি জমি বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তিনি লীজ নেওয়া জমিটি বিক্রি করেননি। নিজের দোকানঘরটি তিনি মেরামত করছেন।
চাঁচকৈড় হাটের ইজারাদার বিএনপি নেতা দুলাল সরকার বলেন, আব্দুল মজিদের পাকা স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি তিনি জানেন। সরকারি জমি হওয়ায় তাদের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে হাটে সরকারি জমিতে এই ধরণের অনেক পাকা স্থাপনা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ সরকারি জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। সরকারি জমিতে নির্মাণাধীন পাকা স্থাপনা নির্মাণের সুপারিশ নিয়ে তার কাছে এসেছিলেন লীজ গ্রহিতা আব্দুল মজিদ। অনুমতি না দিয়ে স্থাপনা ভেঙে ফেলতে আব্দুল মজিদকে ৭ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। নিজে থেকে স্থাপনা সরিয়ে না নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তিনি সরকারি জমি বিক্রির বিষয়টি তিনি জানেন না।