২৯ মার্চ, ২০২৫

চাষীর পুকুর থেকে ২৮ লাখ টাকার মাছ লুট

চাষীর পুকুর থেকে ২৮ লাখ টাকার মাছ লুট

আরফান নামের এক চাষীর পুকুর থেকে অন্তত ২৮ লাখ টাকার মাছ লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর বিলের একটি পুকুর থেকে ওই মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন চাষী আরফান।

লুটের খবর পেয়ে শনিবার ভোরে মাছভর্তি একটি পিকআপ এবং লুটের কাজে ব্যবহৃত পালসার, আরটিআর মডেলের তিনটি মটোরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগে মাছচাষী আরফান স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ভম্বু ও আব্দুল হান্নান মণ্ডলসহ ১৫জনকে আসামি করেছেন।

প্রতিবেশি মাছচাষী রিপন আলী বলেন, পাশ্ববর্তী পুকুরের নৈশ্যপ্রহুরী আব্দুর রাজ্জাক রাত ১২ টা নাগাদ মোবাইলফোনে তাকে মাছ লুটের খবরটি দেন। খবর পেয়ে তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। একটু পরে জানতে পারেন তার পাশের চাষী আরফানের পুকুর থেকে মাছ লুট করা হচ্ছে। কিন্তু ভয়ে তারা বাধা দিতে পারেননি।

মাছচাষী প্রতক্ষ্যদর্শী মো. ঝান্টু বলেন, শনিবার ভোরে তিনি নিজের পুকুরে যাওয়ার সময় পাকা সড়কের মাথায় ২০ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেল দেখেন। এসব ব্যক্তিরা মোটসাইকেল রেখে আরফানের পুকুরে মাছ ধরছিলেন।

ভুক্তভোগি মাছচাষী আরফান মিয়া বলেন, ঢাকা থেকে এসে তিনি প্রায় দুই বছর ধরে গুরুদাসপুরে পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছিলেন। ১২ বিঘা জলকরের ওই পুকুরটিতে তিনি রুই-কাতলাসহ ১২ প্রজাতির প্রায় ৬৫ লাখ টাকার মাছ চাষ করেছিলেন। শনিবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে মাছ লুটের খবর পান তিনি। জানতে পারেন ৭টি পিকআপে করে প্রায় ২৮ লাখ টাকার মাছ লুট করা হয়েছে। এসময় তিনি পুলিশে খবর দেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিক, স্থানীয় ভম্বু ও আব্দুল হান্নান মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে তাকে হয়রানি করে আসছিলেন। সবশেষ শুক্রবার ভম্বু নামের ওই ব্যক্তি নেশা করার জন্য ৫হাজার টাকা চাঁদাও নেন পুকুরের পাহাদার আরিফুলের মাধ্যমে।

মাছ লুট হওয়া পুকুরের নৈশ্যপ্রহুরী আরিফুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে একদল লোক এসে তাকে অস্ত্র ধরে জিম্মি করেন। প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পুকুরের মাছ লুট করে পিকআপযোগে অন্যত্র নিয়ে যান। মাছ লুট করতে রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পয়ন্ত সময় লাগে দুর্বৃত্তদের। এসময় পুকুরে স্থাপন করা সিসিটিভি ও হার্ডডিস্ক ভাঙচুর করা হয়।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম সাওয়ার হোসেন বলেন, পুকুর থেকে মাছ লুটের খবর পেয়ে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান লুটেরা। এ সময় লুটের কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল ও মাছভর্তী পিকআপ জব্দ করা হয়। লুটের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। মাছ ধরার জাল, মোটরসাইকেল ও পিকআপের সূত্র ধরে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন তারা।