উল্লাপাড়ার ঘটিনা করতোয়া রেল সেতুর পাশে এখন শিমুল ফুলের মহাসমারোহ। রেলপথ ও নদীপাড়ে সারিসারি শিমুল গাছগুলো লাল ফুলে ছেয়ে গেছে। সেই সাথে হাজারো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে এই জনপথ।
সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতীসহ নানা বয়সী নারী-পুরুষের পদ চারণায় সড়ক সেতু ও রেল সেতুর মাঝের অংশটি এক নান্দনিক সৌন্দর্যের জায়গা হিসাবে পরিচিত হয়ে পড়েছে। এমন সৌন্দর্যে যেন নিমিষেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মার্চ মাসের মাঝা মাঝি সময় পর্যন্ত এই স্থানটি প্রকৃতি প্রেমীদের যেন হাত ছানি দেয়। বহু দূর দূরান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা এখানে আসেন। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা যেমন আসেন পাশাপাশি পরিবারের লোকজন নিয়েও অনেকে এখানে বেড়াতে আসেন। বিশেষ করে বিকেল বেলা ঘাটিনায় করতোয়া পাড়ে যেন মানুষের মেলা বসে। আর সেই সুবাদে শিশু কিশোরদের আনন্দ দেবার জন্য নাগরদোলাও বসিয়েছে। আনন্দে মাতছে ছেলে মেয়েরা।
রোববার সরেজমিনে ঘাটিনা রেল সেতুর পাশে গিয়ে দেখা যায় শত শত নারী-পুরুষ শিমুল ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে এসেছেন। কথা হয় সদাই থেকে আসা নাজমুল হক, বেতবাড়ী থেকে আসা সাকিব হোসেন, সলঙ্গা থেকে আসা বৃষ্টি খাতুনের সঙ্গে। এরা জানালেন, কয়েক বছর ধরে এ সময় তারা ঘাটিনায় করতোয়া পাড়ে শিমুল ফুলের নান্দনিকতা দেখতে আসেন।
সেই সাথে উপভোগ করেন ফুলে ফুলে ছাওয়া গাছের ডালে ঘুরে বেড়ানো নানা রকম পাখির কলতান। খুব ভালো লাগে তাদের দেখতে। কিন্তু ১৫/২০ দিনের বেশি শিমুল গাছগুলোতে ফুল থাকে না। ফল ধরতে শুরু করলেই ফুলের পাপড়িগুলো ঝরে পড়ে। তখন আর সৌন্দর্য থাকে না। তারপরেও অল্প দিনের জন্য হলেও ঘাটিনা রেল সেতুর পাশের এই স্থানটি তাদের জন্য খুবই আকর্ষণীয় বলে উল্লেখ করেন তারা।
বাবার সঙ্গে মোটর সাইকেলে ২০ কিলোমিটার দূরবর্তী বেলকুচি থেকে করতোয়া পাড়ে এসেছিল দশ বছরের শিশু সামিয়া। তার ভাষায় পাতাহীন শিমুল গাছের পুরো অংশ জুরে লাল রঙের হাজারও ফুলগুলো ছাতার মতো মনে হয়। এমন সুন্দর দৃশ্য দেখতে তার খুব ভালো লাগছে। আর তাইতো বাবার সঙ্গে এখানে বেরাতে এসেছে। বস্তুতঃ ঈশ^দী-ঢাকা রেলপথের দুই ধার ও রেল সেতু সংলগ্ন করতোয়া নদীপাড় অল্প কিছু দিনের জন্য হলেও এক দর্শনীয় স্থানে রূপ নেয় প্রতিবছর এসময়। প্রকৃতি প্রেমীদেরকে যেন কাছে ডাকে অনন্য সৌন্দর্যের আধার লাল শিমুল।