অন্যদিনের মতোই ঘরে পানির সংগ্রহ ছিলনা। তবে অন্যদিন লাইনে পানি এলে চলতো প্রয়োজনীয় কাজ-কাম। কিন্তু গত সোমবার দুপুরের পর আর কলে পানি আসেনি। একারণে রান্না আর খাওয়ার পানির অভাবে মহাবিপেদে পড়েছেন চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার এলাকার পোড়া বস্তির বাসিন্দা রোজিনা বেগম। পানি ছাড়া কি এভাবে একবেলাও চলতে পারেন তারা?
পানি না পেয়ে এভাবে আক্ষেপ করছিলেন রোজিনা বেগম। মোটামুটি তিন দিন ধরে রোজিনা বেগমের ঘরে পানি নেই। চট্টগ্রাম নহরের কুয়াইল এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে গত সোমবার দুপুরে ফুটো হয়ে গেছে চট্টগ্রাম ওয়াসার মূল সঞ্চালন পাইপলাইন। তখন থেকেই পানির সংকটে পড়েছেন রোজিনা বেগমেরা।
ত্রিশোর্ধ্ব রোজিনা বেগম বলেন, পানির অভাবে বাসনকোসন ধুতে পারেননি তিনি। ধোয়া হয়নি জামাকাপড়ও। হয়নি গোসল। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এবং বিকেলে আধা মাইল হেঁটে খাওয়ার জন্য ২০ লিটার পানি এনেছিলেন। আজ সন্ধ্যায় আবারো পানি আনতে যাবেন।
শুধু রোজিনা বেগম নন চট্টগ্রাম নহরের অন্তত ৩০ এলাকার বাসিন্দারা পানি সংকটে দিন পার করছেন। পাইপ ফুটো হওয়ার কারণে ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। এই শোধনাগার থেকে দিনে ১৪ কোটি লিটার পানি পাওয়া যেত। এখন আর এক লিটার পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে নগরজুড়ে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মেরামত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান নেই।
ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ ও ২ থেকে আসে ১৪ কোটি করে ২৮ কোটি লিটার, মদুনাঘাট পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি লিটার ও মোহরা পানি শোধনাগার থেকে আসে ৯ কোটি লিটার পানি।
এ ছাড়া গভীর নলকূপ থেকে আসে ৪ কোটি লিটার পানি আসে। দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ৫০ কোটি লিটার। কর্ণফুলী নদীতে পানি কমে যাওয়ার ও শেওলা বাড়ার কারণে প্রায় এক মাস ধরেই পানির উৎপাদন কম হচ্ছিল। দিনে গড়ে ৫ কোটি লিটার পানি কম পাচ্ছিল সংস্থাটি। গতকাল উৎপাদন হয়েছে ৩২ কোটি লিটার।