নওগাঁর বদলগাছীতে অবৈধভাবে হাটের জায়গা দখল করে ইটের পাঁকা দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ ফারুক আহাম্মেদ (৪৫) ও রাজু আহাম্মেদ (৩৫) নামের দুই ভাই প্রভাব খাটিয়ে জোর করে অবৈধভাবে ইটের পাঁকাঘর তৈরি করছেন উপজেলার পাহাড়পুর হাটের মাছবাজারের পাশে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ একাধিক জায়গায় আহসান হাবিব ভুট্রু নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ ওঠা দুই ভাই ফারুক আহাম্মেদ ও রাজু আহাম্মেদ পাহাড়পুর ইউপির গোয়ালভিটা গ্রামের আলেফ আহাম্মেদের ছেলে।
জানাযায়, বদলগাছী উপজেলার ৩নং পাহাড়পুর ইউনিয়নের একমাত্র বড় হাট গোয়ালভিটা গ্রামের পাহাড়পুর হাট। সেখানে প্রতি সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার এই ২দিন হাট বসে। অত্র ইউনিয়নে আর কোন বড় হাট না থাকায় এই হাটে লোকজনের সমাগম বেশি ।
সকল পন্য বিক্রির একমাত্র জায়গা এই হাট। বিগত সময়ে হাট ইজারাদার, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মদদে, হাটের সভাপতিকে ম্যানেজ করে প্রথমে হাটের জায়গা দখল করে টিনের বেড়া দিয়ে ঘর তৈরি করে এবং পরবর্তীতে ওই টিনের ঘরের জায়গায় তৈরি করা হয় ইটের পাঁকা ঘর।
এদিকে অপরিকল্পিতভাবে এসব দোকানঘর তৈরিতে দিনদিন ছোট হয়ে আসছে হাটের জায়গা। আবার যেসব যায়গায় দোকান হচ্ছে সেসব দোকানের পিছনে হাটের জায়গার পাশাপাশি অনেকের মালিকাধীন জায়গাও আছে।
সরেজমিনে গতকাল ৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার পাহাড়পুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের কাঁচাবাজার, মাছের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে এসব দোকান পাট। টিনের পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ইটের পাঁকাঘর। আবার কেউ টিনের ঘরের মধ্যে নতুন করে তুলছে ইটের ঘর।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, বিগত সময়ে হাটবাজারের সভাপতি এবং এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে প্রথমে টিন দিয়ে ঘিরে দোকানঘর তৈরি করে। পরে সুযোগ বুঝে টিনের ঘরের ভিতর তৈরি করা হয় ইটের পাঁকাঘর।
হাটের মাছ বাজারের পাশে ৩টি দোকানের জায়গা দখল করে পাঁকাঘর তুলেছে। কিন্তু দখলকৃত হাটের জায়গার পিছনেই ওই ব্যক্তির নিজস্ব জায়গা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। তারপরও তিনি নিজের জায়গা বাদ দিয়ে হাটের জায়গা দখল করে বসে আছেন। আর এভাবেই হাটের জায়গার দখল চলে।
পলাশ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আগে হাটে সাইকেল, ভ্যান রেখে বাজার করতাম। কিন্তু এখন সাইকেল, মোটরসাইকেল এবং ভ্যান রাখার জায়গা নেই। হাটের ফাঁকা যায়গা গুলোতে অবৈধভাবে দোকান ঘর তুলে দিন দিন জায়গা ছোট করছে।
এদের অনেকের হাটের সাথে নিজের জায়গা আছে, কিন্তু তারা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মদদে অবৈধভাবে দোকান ঘর তৈরি করে জায়গা দখল করছে। আমরা এলাকাবাসী হাটের জায়গা ফাঁকা চাই। এসব অবৈধ দোকান দ্রুতই অপসারণ চাই।
এ ব্যাপারে মোবাইলে জানতে চাইলে রাজু আহাম্মেদ রাগান্বিত হয়ে বলেন, আপনি সরাসরি এসে আমার ছবিসহ নিয়ে যান। তবে তিনি হাটের জায়গায় ঘরটি নির্মাণ করছে স্বীকার করে বলেন, হাটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানে। তারা অনুমতি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ৩০বছর ধরে ঘরটাতে ব্যবসা করে খাচ্ছি। আমার ঘরটা পিছনে, সবার শেষে। আমি যেখানে ছিলাম সেখানেই করছি। ওই জায়গাতে একটু পাঁকা করে সাটার সিস্টেম করতে যাচ্ছি। তবে সরকার যখন চাইবে বা ভেঙে দিবে, তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।
অভিযোগকারী আহসান হাবিব ভুট্রু মোবাইলে বলেন, তারা দুই ভাই হাটের জায়গা দখল করে তিনটি দোকান অবৈধভাবে নির্মাণ করছেন। এতে হাটের জায়গার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রতিকারের আশায় আমি অভিযোগ দিয়েছি।
এব্যপারে পাহাড়পুর হাটের সভাপতি ও পাহাড়পুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিশোর বলেন, এবিষয়ে আমি জানি না। তবে খোঁজ নিচ্ছি।
হাটের জায়গায় পাঁকাঘর নির্মানের ব্যাপারে জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান (ছনি) মোবাইলে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।