৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

শেষ বিকেলের মেয়ে

শেষ বিকেলের মেয়ে

মেহেক লিভিং রুমে  বসে ম্যাগাজিন পড়ছে। আজ তার শরীর অনেক টা ভালো । মা বাবা পাশের রুমে গল্প করছে। বাবা মায়ের এই হাসিখুসি চেহারা মনে হতেই মেহেক এর মন টা প্রশান্তিতে ভরে গেলো। মাঝে মাঝে তার বিস্ময় লাগে যে এই মেয়েটা তাকে গর্ভে ধারন করেছিলো । শান্ত নদীর মত বয়ে চলা এক রহস্যময়ী মানুষ।

যার সব আবিষ্কার করেও মনে হয় কিছুই জানা হলোনা। এত সরলতার মাঝেও যার জটিল রসায়ন বোঝা মুসকিল। জীবনের এত চড়াই উতরাই এর মাঝেও যার ধৈয্য চুতি ঘটেনি বিন্দু পরিমান। একজন নারী কিভাবে এমন শান্ত নদীর মত হয়।

তার মায়ের সৌন্দর্যের কাছেও তাকে বড্ড বেমানান  লাগে। যদিও বয়সের ভারে সেই দেবীমুর্তি অনেক টাই ম্লান। তারপরেও তার স্বভাবগত ছেলে মানুষির জন্যই তার বাবা আর সে দুজনেই তাকে অনেক ভালবাসে। মা কি সেটা বুঝেনা নাকি বুঝেও বুঝতে দেয়না এটাও মেহেক এর কাছে এক রহস্য। দুপুরের খাবার খেয়ে যে যার রুমে ঘুমিয়ে পরে।

রাত ৮ টা। মেহেক তার পড়ার টেবিল এ। সামনে বিসিএস ভাইভা। তারই প্রস্তুতি নিচ্ছে সে। সব কিছু ঠিক ঠাক হয়ে গেলেই সে চলে যাবে কোন এক উপজেলায়। মা মাটি মানুষের সেবায়।গত কিছুদিন বাসায় ছুটিতে থাকার পর মেহেক আজকেই হসপিটাল এ এসেছে। আজ ওয়ার্ড এ এডমিশন। সকাল থেকেই রোগীর চাপ। এরই মাঝে ইমারজেন্সী এক পেশেন্ট আসছে। রাপচার ইউটেরাস।এখনি ওটি তে যেতে হবে।

সিনিওর আপুরা এসে রোগির লোকজন এর সাথে কাউন্সিলিং করে। তারপর পেশেন্ট রেডি করে মেহেক কে বলে তখনি ওটি তে নিয়ে যেতে। সব কিছু শেষ করে আসতে আসতে বিকাল হয়ে যায়। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে মেহেক বিছানায় যেতেই ঘুমিয়ে পরে।

ঘুমের মাঝেই হঠাৎ করেই সপ্ন হয়ে আসে সেই অতল সাগরের মত গভীর এক জোড়া চোখ,সেই মায়া ভরা মুখ। কেন বারবার? ঘুম ঘোরেও তার উত্তর খুজতে থাকে মেহেক। 
কোন উত্তর তার জানা নাই,সে জানেনা। 

চলবে.... 

২৬.৯.২১
রাজশাহী