গুরুদাসপুরে মাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে ববি খাতুন (২০) নামের এক তরুণীকে ১০ বছরের আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালে দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোর শিশু আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম ওই রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার সময় আসামি ববি খাতুনের বয়স ১৬ বছর ২ মাস ছিল। একারণে ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার শিশু আদালতে হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার সময় আসামি ববি খাতুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। সাজাপ্রাপ্ত ওই তরুনী পরবর্তীতে আদালতে হাজির হলে বা পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর দিন থেকে এই সাজা কার্যকর হবে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানাগেছে, নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের নাড়িবাড়ি উত্তরপাড়া মহল্লার নজরুল ইসলামের ছোট মেয়ে। ২০২১ সালের ২২ মার্চ সন্ধ্যায় মা সেলিনা বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেসময় নিহত নারীর ভাই সুলতান আহমেদ খান বাদী হয়ে ভাগনি ববি খাতুনকে অভিযুক্ত কওে গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিনই ববিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ববি তার মাকে ব্লেড দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন। হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আদালতকে জনান ববি। মামলাটির তদন্ত শেষে ওই বছরের ২০ আগস্ট একমাত্র আসামি ববির খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। পরে মামলাটি বিচারের জন্য শিশু আদালতে আসে।
রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামির জন্য নিযুক্ত আইনজীবী রাশেদা খাতুন জানান, হতক্যাণ্ডের পর পরই পুলিশ ববি খাতুনকে গ্রেপ্তার করেন। একারণে ওই দিন থেকে বেশকিছু দিন হাজতে ছিলেন ববি। তবে পরবর্তীতে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘদিন আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন। তবে মামলাটি যুক্ততর্কে আসার পর থেকে গা ঢাকা দেন ববি খাতুন। ববি পলাতক থাকলেও রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত হয়ে আসামির পক্ষে যুক্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। যুক্তি-তর্ক শুনে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় এনে আদালত ববি খাতুনকে শিশু আইনের সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন।
শিশু আদালতের সরকররি কৌঁসুলি দিনাই তাছরীন বলেন, হত্যকাণ্ড সংগঠিত করার সময় অভিযুক্ত নুশরাত জেরিন ববির বয়স ছিল ১৬ বছর ২ মাস। ঘটনার দিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর ববি আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। ববির দেওয়া জবানবন্দি এবং সাক্ষীদেও সাক্ষ্য বিবেচনায় এনে আদালত শিশু আইনের দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় আসমি আদালতে উপস্থিত না থাকায় সাজা পরোয়ানাও তামিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।