কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির পদ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুইজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছে।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) সকাল আনুমানিক ৯ টায় উপজেলার শাহপুর গ্রামের শান্তির বাজারে এঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, মজিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মো.শাহ আলম সরকার (৪৫), তার বড় ভাই ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফিরুজ মিয়া (৫৫) ও তার ছেলে তামিম (১৭)। প্রতিপক্ষ সেকান্দর আলী মন্ডল (৪৮), কিবরিয়া (২৫) ও মো. বোরহান(২২)।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে মজিদপুর ইউনিয়নে শাহপুর গ্রামে ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন উপলক্ষে শাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মাজেদুল ইসলাম মন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি সামসুল হক ওরফে হাবুল বেপারী বড় ছেলে ফিরুজ মিয়া ও একই ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের বিএনপি কর্মী সেকান্দর আলী মন্ডল সভাপতি প্রার্থী হয়।এসময় ফিরুজ মিয়ার ছোট ভাই ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি শাহ আলম সেকান্দরকে কটাক্ষ করে কথা বলে এবং একাপর্যায় শাহ আলমের লোকজন সেকান্দর ও তার ছেলে বোরহানকে মারধর করে। তারই জের ধরে রোববার সকাল ৯ টায় শাহপুর শান্তির বাজারে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এবিষয়ে আহত শাহ আলম বলেন, শনিবার বিকালে আমাদের ওয়ার্ডের কমিটি গঠন কারার লক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অতিথি হিসেবে আগত নেতৃবৃন্দ ওয়ার্ড সভাপতি প্রার্থী আগ্রহীদের নাম জানতে চাইলে আমার বাবা সামসুল হক হাজী আগে সভাপতি ছিলেন এখন বাবা বয়স্ক হওয়ায় আমার বড় ভাই ফিরুজ মিয়া প্রার্থী হওয়ায় সেকান্দর আলী মন্ডল প্রার্থী হয়েছে। তখন আমি বলি আমার ভাই প্রার্থী হওয়ায় সেকান্দর প্রার্থী হয়েছে। এই কথা বলায় উভয়ের মধ্যে তর্কাতর্কি এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তারই জেরে রোববার সকালে পরিকল্পিতভাবে সেকান্দর লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে এবং আমাকে ও আমার ভাতিজাকে গুলি করাসহ আমার বড় ভাইকে মারধর করে। আমি ঘটনার সঠিক তদন্ত মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে সেকান্দর আলী বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি করে আসছি। ওয়ার্ড কমিটি সভায় আমি সভাপতির পদে শাহআলমের ভাইয়ের বিপরীতে প্রার্থী হলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনে তারা আমার উপর হামলা চালায় এবং আমার ছেলেকে মারধর করে। তিনি আরও বলেন, আমি প্রার্থী হয়েছি নেতৃবৃন্দ যদি আমাকে যোগ্য মনে করে তাহলে দিবে যোগ্য না হলে দিবেনা। কিন্তু শাহ আলমের ঘরে পাঁচটি পদ তারা কাউকে কোনো পদ দিবেনা। কিন্তু পদ চাওয়ায় পরের দিন আবার আমার উপর হামলা করে। হামলায় আমি, আমার ছেলে ও আমার শ্যালক আহত হয়েছি। বর্তমানে আমার শ্যালক ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
মজিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মাজেদুল ইসলাম মন্টু বলেন, আমরা ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন করার জন্য শাহপুর স্কুল মাঠে আলোচনা সভা করি। একপর্যায়ে আমরা ওয়ার্ড সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আগ্রহীদের নাম জানতে চাইলে তখন শাহ আলমের ভাই ফিরুজ সভাপতি প্রার্থী হয় এবং সেকান্দর আলী মন্ডলও প্রার্থী হয়। এসময় শাহ আলম সেকান্দরের সাথে তর্কে জরিয়ে পরে কেনো সেকান্দর প্রার্থী হলো, পরে মারামারি ঘটনা হওয়ায় আমরা সভার সমাপ্তি ঘোষণা করে চলে আসি।
তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, শাহপুর গ্রামে মারামারি হয়েছে খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুক্ত/আরেফিন