২১ নভেম্বর, ২০২৪

চলনবিলে শুটকির চাতালে নারী শ্রমিকদের মজুরী অর্ধেক

চলনবিলে শুটকির চাতালে নারী শ্রমিকদের মজুরী অর্ধেক

চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন শুটকির চাতালে মাছ রোদে শুকানো, মাছ বাছা ও মাছ কাটার কাজে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে নারীরা।

পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় এসব শুটকির খোলায় নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। এসব  নারীর অধিকাংশই গরিব ও অসহায়। কিন্তু এসব নারী শ্রমিকের মজুরি এত কম দেওয়া হয় তা দিয়ে সংসার চালানো তাদের পক্ষে খুবই কষ্টকর।  

শীতের শুরুতেই উল্লাপাড়া উপজেলার শুটকি ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত রয়েছেন মাছ শুটকির কাজে। চলনবিলের আওতায় বড় পাঙ্গাসী, বাঙ্গালা, উধুনিয়া, মোহনপুর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক ব্যক্তি এই মৌসুমী ব্যবসা করে থাকেন।  

বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের খাদুলী গ্রামের বায়েজিদ হোসেনের শুটকি মাছের চাতালে গিয়ে কথা হয় এই চাতালে কাজে নিয়োজিত জয়ন্তী দাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে শুটকির কাজ শুরু হয়। চলে প্রায় ৭ মাস। এই ৭ মাস শুটকির চাতালে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি।

প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে কাজ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। প্রতিদিন কত পান জিজ্ঞেসা করলে জয়ন্তী বলেন, সারাদিন কাজ করে মাত্র ২০০ টাকা পান তিনি।  কিন্তু পুরুষ শ্রমিকের মজুরী ৪০০ টাকা।

বর্তমান দ্রব্যমুল্যে বাজারে এই ২০০ টাকা দিয়ে সংসার চলা খুবই কঠিন। পুরুষদের সঙ্গে সমান ভাবে কাজ করেও নারী শ্রমিকদের মজুরী দেওয়া হয় অর্ধেক। নারীরা কখনই তাদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য পাননা।

জয়ন্তী দাস বলেন, বর্ষা মৌসুমে অন্য কোথায় কাজের সুযোগ না থাকায় তাদেরকে কম মজুরীতে বাধ্য হয়ে কাজ করতে হয়। জয়ন্তী দাসের মতো অনুরুপ কথা বললেন, শুঁটকির চাতালে দিন মজুরীতে কাজ করা খুশী খাতুন, শাহিনুর খাতুন। এসব নারী শ্রমিক অবিলম্বে তাদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য প্রদানের জন্য মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।  

বড়পাঙ্গাসীর শুটকি ব্যবসায়ী বায়েজিদ হোসেন জানান, প্রতিবছর ৩ হাজার মন শুটকি উৎপাদন করলেও এবছর মাছ অনেকটাই কম। এ কারনে মাছের দাও বেশি। অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে মাছ কিনতে পারেন নাই তিনি।

নারী শ্রমিকের মজুরী পুরুষ শ্রমিকের চাইতে তুলনামূলকভাবে কম দেওয়া হয়। তবে চলনবিলের অপর শুটকি চাতাল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এদের দাবি পূরণে তিনি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন বলে জানান।

উল্লাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান জানান, এবছর চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়ার অংশে মাছের উৎপাদান প্রায় ৬৬০ মেট্রিক টন। তবে এবছর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কিনা বলা মুশকিল। নারী শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির ব্যাপারে তিনি চেষ্টা করবেন বলে উল্লেখ করেন।