রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, আন্দোলন শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। এটিকে কেন্দ্রে করে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাসানো হয়েছে।
যেভাবে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা বলয়
বঙ্গভবনের সামনে পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা মানব দেওয়াল তৈরি করে রেখেছেন। এরপর ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। ব্যারিকেডের পর বসানো হয়েছে কাঁটা তারের বেড়া। এরপর আবারো একটি স্তুরে ব্যরিকেড বসানোর পর সেনা সদস্যরা জল কামান নিয়ে প্রস্তুত আছেন। এসব আয়োজন করা হয়েছে যাতে কোনো পরিস্থিতিতেইর আন্দোলনকারিরা বঙ্গভবনে প্রবেশ করতে না পারেন।
বঙ্গবভনের সামনে এভাবেই ব্যারিকেড বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।— ছবি মুক্ত প্রভাত
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ক্ষেত্র কী প্রস্তুত
ক্রমেই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণে চাপ বাড়ছে। কী হবে? রাষ্ট্রপতি নিজে পদত্যাগ করবেন, নাকি অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে—এটিই এখন মূল আলোচনা। রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের পদ্ধতী কী হবে, আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে তা স্পষ্ট হতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীসহ সারাদেশে পদত্যাগের বিষয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে শুরু হওয়ায় আন্দোলন এখন তুঙ্গে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় দুইব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন আরো এক ব্যক্তি।
বঙ্গবভনের সামনে এভাবেই ব্যারিকেড বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।— ছবি মুক্ত প্রভাত
মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবভনে প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পিজিআর সদস্যরা ব্যারিকেডের সামনে অবস্থান নেন।
গুলিবিদ্ধ দুই ব্যক্তি হলেন, ফয়সাল আহমেদ বিশাল (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (৪৫)। সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হয়েছেন আরিফ (২০) নামের এক যুবক। তাদের তিনজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বঙ্গভবনের সামনে ছররা গুলিতে অহত হয়ে দুই জন এবং সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হয়ে আরোক ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবভনের সামনে এভাবেই ব্যারিকেড বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।— ছবি মুক্ত প্রভাত
মঙ্গলবার বিকেল থেকেই বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেয় কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ইনকিলাব মঞ্চ, রক্তিম জুলাই ২৪, ৩৬ জুলাই পরিষদ, জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যান পরিষদ, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার মঞ্চের নেতাকর্মীরা।
এসময় বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে নানা ধরণের স্লোগান দেন।
বঙ্গবভনের সামনে এভাবেই ব্যারিকেড বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।— ছবি মুক্ত প্রভাত
সন্ধ্যার পর থেকে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ বঙ্গভবনের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে সামনে অগ্রসর হতে চােইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এসময় টিয়ারসেলও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। এতে কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন। পরে পুলিশের ওপর চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। এসময় সেনা সদস্যরা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।