২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিএনপি নেতার ইন্ধনে সংখ্যালঘু পরিবারে হামলা

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় বাজারপাড়া মহল্লায় সংখ্যালঘু হিন্দু মদন র্শমার পরিবারে হামলা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। তিনি বর্তমানে জীবনের নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন। মদন শর্মা ওই মহল্লার স্বর্গীয় সাধন শর্মার ছেলে।  

পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ৪ টার দিকে মদন শর্মা তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। অভিযুক্ত দুলাল সরকার একই মহল্লার মৃত আছের সরকারের ছেলে ও গুরুদাসপুর পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক।

সংবাদ সম্মেলনে মদন শর্মা অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি একটি ফেসবুক লাইভে এসে ‘‘চাঁচকৈড় বাজারে নিরবে চাঁদাবাজি চলছে’’ এমন মন্তব্য করেন। আগামী পৌর নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী দুলাল সরকারের নাম উল্লেখ করে লাইভে তিনি আরো বলেন, রাজনীতি করতে হলে আগে মানুষকে ভালোবাসতে শিখুন।

ওই লাইভের সুত্র ধরে ওই দিনই বেলা ২ টার দিকে বিএনপি নেতা দুলাল সরকারের অনুগত মিন্টু জামাদার ও মিলনের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধদল মদনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে লাঞ্চিত ও নির্যাতন করে।

মদন শর্মা আরোও জানান, ঘটনার পরদিন বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করতে যান। এসময় থানার মধ্যেই তিনি আরেক দফা হামলার শিকার হন।

এসময় দুলাল সরকার নিজে মারধোর করেছেন বলেও অভিযোগ করেন মদন শর্মা। এসময় গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু নবাগত ওসি সরওয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে থানায় অবস্থান করেন।

সেই সুবাদে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দুলাল সরকার ও তার লোকজনকে থামানোর চেষ্টা করেন মশিউর রহমান বাবলু। তাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হলে মশিউর রহমান ও দুলাল সরকারের সর্মথকদের মধ্যে হাতাহাতির রুপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে থানার বাহিরে বের করে দেন পুলিশ।

এসময় মদন শর্মার স্ত্রী শ্যামলী রানী বলেন, তার পরিবার নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। অভিযুক্তরা প্রাণনাশের হুমকী দিচ্ছে। তিনি আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সহযোগীতা কামনা করেন।  আমরা সংখ্যালঘু হওয়ায় আমাদের উপর নির্যাতন করছে তারা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে দুলাল সরকার মুঠোফোনে অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, মদন শর্মা আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত। আমার রাজনৈতিক মান ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু মাদকাশক্ত মদন শর্মাকে ব্যবহার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। আমার রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে এসব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।

গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু মদন শর্মাকে থানার মধ্যে বাধা প্রদান ও লাঞ্চিত করার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনা ওসি সাহেবের রুমে। আমি ঘটনাটি নিবৃত করার চেষ্টা করেছি। দুলাল মেয়র হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলতেই পারেন।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।