২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পুকুরে বিলীন হচ্ছে চলাচলের সড়কটি

পুকুরের পানি ঢেউ যত বয়।তত ভেঙ্গে যায় পুকুরের পাড়। ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে এখন প্রায় এসে গেছে পাকা সড়কের কাছাকাছি। যে কোন সময় ধসে পুকুরের পানিতে তলিয়ে যেতে পারে পাকা সড়কটি। এতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে পথচারীসহ কয়েক গ্রামের মানুষের চলাফেরা।

এই দৃশ্যাটি ঠাকুরগাও রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের কুমরগঞ্জ থেকে আলসিয়া ভকরগাও এলাকায় চলাচল সড়কের মাঝামাঝি স্থানে। কোন কারণে সড়কটি ধসে গেলে আলসিয়া ভকরগাওসহ আশপাশ কয়েক গ্রামের প্রায় পাচ হাজার মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় সাড়ে পাচ বিঘা জমির আয়তনের ওই পুকুরটি নেকমরদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের ভাতিজা নবাব আলীর। পাকা সড়কটি নির্মাণের পরে সেখানে চেয়ারম্যানের ভাতিজা পুকুরটি খনন করেছে। সে সময় স্থানীয় মানুষ তাকে সড়কের ক্ষতি যেন না হয় সেভাবে পুকুর খনন করার কথা জানালেও সে কোন কিছুই কর্ণপাত করেননি।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরের পানি একেবারে এলজিইডির নির্মাণাধীন সড়কের নিকটে দোল খাচ্ছে।  পুকুরের মাঝেই পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ইউড্রেন রয়েছে। সেই ড্রেনের মাটি ধসে ইউড্রেন দৃশ্যমান হয়ে গেছে।

এটি ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় এটিও ধসে যেতে পারে। স্থানীয়রা মনে করছেন যে কোন সময় বড় ধরনের বন্যা বা পানির স্রোত বইলে এই সড়কটি ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।

স্থানীয় পথচারী কেরামত আলী,খলিল উদ্দীনসহ অনেকে বলেন, আলসিয়া ভকরগাওসহ কয়েক গ্রামের মানুষ এ সড়ক দিয়ে কুমরগঞ্জ বাজার হয়ে ঐতিহ্যবাহি নেকমরদ হাটে চলাচল করে। তাদের বিভিন্ন কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজ যাতায়াত ও নিজেদের ব্যক্তিগত কাজের জন্যও কোথাও যাওয়ার ক্ষেত্রে এ সড়ক ব্যবহার করে।

বর্তমানে সড়কটি যেভাবে ঝুকিপূর্ণ অবস্থা রয়েছে। এটি যদি এখনেই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। তাহলে যে কোন সময় সড়কটি ধসে পানিতে মিশে যাবে বলে তারা আশংকা করছে।

এদিকে আলসিয়া গ্রামের কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, নবাব আলী চেয়ারম্যানের ভাতিজা সড়কের পাশে মাত্র দশ ফিট জায়গা রেখে সে একটি বড় পুকুর অন্যায়ভাবে এক্সাভেটর মেশিন দিয়ে খনন করেছে। তাকে সে সময় প্রশাসন বাধা দেয়নি। আর সাধারণ মানুষ অভিযোগ দিলেও সে কারো বাধা মানে নি। এখন সড়কের নিকটবর্তীতে পুকুরের পানি চলে এসেছে।

যে কোন সময় পুকুরের পানির ঢেউয়ের স্রোতে সড়কটি ধসে যেতে পারে। তখন অন্যের ভুলের খেসারত হিসাবে সাধারণ মানুষকে চলাচলের ভোগান্তিতে পোহাতে হবে। স্থানীয়রা দাবী জানিয়েছেন, দ্রুত সড়কটি সংরক্ষনের ব্যবস্থা নেওয়ার।

এ বিষয়ে পুকুর মালিক নবাব আলী বলেন, অনেক জায়গা ছেড়ে পুকুরটি খনন করা হয়েছিল। ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সড়কের কাছে চলে এসেছে। এবার শুষ্ক মৌসুমে পুকুরের পাড়টি ভালোভাবে বেধে দেওয়া হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, এমন ঘটনা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আনিছুর রহমান বলেন, সড়কের পাশে এভাবে পুকুর খনন করা অন্যায়। বিষয়টি গুরত্ব সহকারে দেখা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।