জমি জটিলতায় স্থবির হয়ে আছে ঠাকুরগাও রাণীশংকৈল পৌরসভার বহুল কাঙ্খিত পৌর ভবন নির্মাণ কাজ।
রাণীশংকৈল পৌরশহরের শান্তিপুর ভান্ডারা এলাকায় হোসেনগাও ইউনিয়নের পুরাতন ভবনের ৬৬টি শতাংশ জমিতে চলতি বছরের তিন মার্চ তিনতলা বিশিষ্ট পৌরভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্থর উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনের প্রায় দুই মাস পরে ভবনের প্রাচী নির্মাণ ও পিলার স্থাপন কাজ শুরু হলেও পুরাতুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে জমির বিরোধের কারণে বর্তমানে কাজ স্থবির হয়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হোসেনাগও ইউনিয়নের পুরাতুন ইউনিয়ন পরিষদের জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে রাণীশংকৈল পৌরভবন। তবে পৌরভবনের নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে।
সেখানে অর্ধ-নির্মিতভাবে সীমানা প্রাচী, ভবনের পিলার স্থাপনের গর্ত খনন করা রয়েছে। এছাড়াও রড দিয়ে পিলার স্থাপনের জন্য প্রস্তুত করে রাখা রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পাথর ও ইট ও ভবনের পাইলিং করার জন্য নির্মিত পিলার।
এ সময় সেখানে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা বকুল মজুমদার,ফয়জুল ইসলামসহ অনেকের সাথে তারা বলেন, দীর্ঘ দশ বছর ধরে শুনছি এখানে পৌরসভার ভবন হবে।
তবে দীর্ঘদিন পর তা বাস্তবায়ন শুরু হতে ধরলেও আবার কাজটি হাসপাতালের সাথে জমি বিরোধের জেরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান পৌরসভা অফিসে গেলে বসার একটি চেয়ার পাওয়া যায় না।
অফিসের কক্ষগুলো ছোট ছোট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসলে সেবা গ্রহিতাদের আর বসার মত জায়গা থাকে না। সেবা গ্রহিতাদের দাড়িয়ে দাড়িয়ে সেবা নিতে হয়।
তাই তারা দাবী করে বলেন যত দ্রুত পৌরভবনটি নির্মিত হবে। তত দ্রুত পৌরবাসী ফিরে পাবে তাদের সেবার মান। তাই স্থানীয়রা দাবী জানিয়েছে খুব দ্রুত আলোচনা সাপেক্ষে বিষয়টি সুরাহা করার।
২০০৪ সালে পৌরসভা স্থাপিত হওয়ার পর গ শ্রেণী থেকে উন্নতি হয়ে খ শ্রেণীতে উন্নতি হলেও অদ্যবধি রাণীশংকৈল পৌরশহরের চাদনী এলাকার একটি ভাড়া বাড়ীতে চলছে পৌরসভার কাযর্ক্রম।
এরমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের প্রশাসক,রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রশাসক ও তিনজন নির্বাচিত মেয়রের মধ্যে সদ্য অপসারিত পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান ৬ কোটি ৬৯ লাখ ৯৯হাজার ৯৯৯টাকায় পৌরভবন নির্মাণের দরপত্র আহবান করেন ।দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি বাস্তবায়নে চুক্তিবদ্ধ হন মের্সাস নন্দন প্রেস নামক ঠাকুরগাও সদর এলাকার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
রাণীশংকৈল পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী জাবেদ আলী বলেন, সীমানা প্রাচী নির্মাণ ও ভবনের পিলার স্থাপনের সময় রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক আব্দুস সামাদ চৌধুরী পুরাতুন হাসপাতালের জমিতে পৌরভবনের স্থাপনা হচ্ছে দাবী করে সরেজমিনে গিয়ে সম্প্রতি কাজ বন্ধ করে দেন। সে থেকে কাজ অদ্যবধি বন্ধ রয়েছে।
পৌর প্রকৌশলী আরো জানান, ভবনের যে পরিমাপ তাতে হাসপাতালের কিছূ জমি প্রয়োজন। বিনিময়ে পৌরসভার কিছু জমিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা শুনতে নারাজ। বর্তমানে বিষয়টি দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার আর্নিকা আক্তার তদারকি করছেন। তিনিই এটির সিদ্বান্ত নেবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক আব্দুস সামাদ চৌধুরী বলেন, পুরাতুন হাসপাতালের মোট জমি দুই একর বর্তমানে দখল রয়েছে এক একর ছত্রিশ শতক জমি। এরপরেও আবার পৌরসভা প্রায় পনেরো শতক জমি দখল নিয়ে ভবনের কাজ করছিল। সেটি তিনি গিয়ে বাধা দিয়ে পিলারের স্থাপনা সরিয়ে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
রাণীশংকৈল পৌরসভার প্রশাসক আর্নিকা আক্তার বলেন, পৌরভবন নির্মাণ এলাকা তিনি পরির্দশন করেছেন। বিষয়টি কিভাবে সুরাহা করা যায় তা নিয়ে তিনি কাজ করছেন। খুব শিগগির সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।