২৪ জুন, ২০২৪

দুর্নীতির অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ে তিনজনকে বদলি

দুর্নীতির অভিযুক্ত ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ও দুদকের মামলার আসামি শহিদুল ইসলাম এবং সহকারী ভূমি কর্মকর্তা খগেন্দ্রনাথ সরকারসহ তিনজনকে বদলি করা হয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পরবর্তী কর্মস্থল হিসেবে মো. শহিদুল ইসলামকে ডিমোশন দিয়েকুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ভূমি অফিসের সাভেয়ার মো. রবিউল ইসলামকে চররাজিবপুর উপজেলা ভূমি অফিসে ও সদরের সালান্দর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা শ্রী খগেন্দ্র নাথ সরকারকে গাইবান্ধার সাঘাটা জুমারবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলি করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোলেমান আলী তাদের বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতিসহ গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে জমি ক্রয় করেন। এরপর সেই জমি সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন সরকারের কাছে। শুধু তাই নয় টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাত করণে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

মাত্র এক বছরের ব্যবধানে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছে কর্মচারী শহিদুল। হঠাৎ করেই এত সম্পদের মালিক হওয়ায় শহরজুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। ডিসি অফিসে সামান্য বেতনের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী এখন ঠাকুরগাঁও শহরের বড় মাঠের পাশে নির্মাণ করছে পাঁচ তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। বাড়িটিতে রয়েছে লিফটের ব্যবস্থাও।

এছাড়াও শহরে ৮ শতক জমির ওপর বসতভিটা, সদরের শিংপাড়া এলাকায় তার ৬০ শতক জমি ও আবাদি ১ একর জমি রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা চলমান রয়েছে।

অন্যদিকে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা খগেন্দ্রনাথ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যপক অনিয়ম- দূর্নীতি ও সেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ ওঠে। খগেন্দ্রনাথ জেলা শহরের কলেজপাড়া, আশ্রমপাড়া হলপাড়া ও আটগ্যালারিসহ বিভিন্নস্থানে একাধিক বাড়ি স্থাপনা নির্মাণ করে বলে জানা গেছে।

অপরদিকে, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ও ঘুষ বানিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে থাকা কালে শহিদুল ইসলামের যোগসাজসে গ্রামের সহজ সরল মানুষের জমি কম দামে কিনে সরকারি প্রকল্পে উচ্চ মূল্যে বিক্রির সহায়তা করে রবিউল।

তবে সরকারের প্রকল্পে বিক্রিত জমির বিষয়ে শহিদুল ইসলাম ও রবিউল ইসলামের সঙ্গে আরো বেশ কয়েকজন জড়িত থাকলেও তারা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত সোমবার (৩ জুন) জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে রুখব দুর্নীতি গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ শ্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তাদের সামনে তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, ক্ষমতা অপব্যবহার ও ঘুষ বাণিজ্যসহ অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়।

আর তাদের বদলির খবরে স্বস্থি প্রকাশ করে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে শান্তির দাবি তুলেন ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ মানুষ।

তারা বলছেন, শুধু  শহিদুল ও খগেন্দ্রনাথকে বদলি করলে হবে না এ জেলায় আরও বহু দুর্নীতিবাজ ক্ষমতার অপব্যবহারকারী কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোলেমান আলী বলেন শুধু দুর্নীতির অভিযোগে বদলিএমিনটি নয়। তাদের বিষয়ে আরও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে সব মিলিয়ে বদলি নিশ্চিত করা হয়েছে।