২ জুন, ২০২৪

পথ শিশুর ঠিকানা হচ্ছে কিশোর কিশোরী সংশোধনাগারে

ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত অজ্ঞাত শিশুর পরিচয় পাওয়া গেছে। এই শিশুর নাম মোঃ সাকিব। বয়স ১২ বছর। তার বাবার নাম আব্দুল মালেক। মায়ের নাম রুকসানা খাতুন।

বাড়ি বরিশাল। বাবা মালেক দীর্ঘদিন ধরে জেলে রয়েছেন। বাবা জেলে যাবার পর মা রুকসানা অনেক দিন আগেই অন্যের সঙ্গে বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন। স্বজন হারা সাকিব ঢাকার টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকার ভাসমান পথশিশু। 

গত ২৯ মে সাকিব টঙ্গী থেকে ঢাকা-রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদে উঠে গন্তব্যহীন ঠিকানায় যাবার পথে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশনের মাঝে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়।

স্থানীয়রা উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় সাকিবকে উদ্ধার করে ওই দিন রাতে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এরপর সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে এই হাসপাতালে সাকিবের চিকিৎসা সম্পন্ন হয়। চার দিন পর শনিবার হাসপাতাল থেকে সাকিবকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সাকিব  সুস্থ হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কের হেফাজতে রয়েছে। 

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় সাকিব। পরে স্থানীয়রা উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের মাধ্যমে তাকে উক্ত হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সদর থানা পুলিশের হেফাজতে সাকিব ৪দিন চিকিৎসা গ্রহনের পর সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়। বর্তমানে পুলিশের নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কে  তাকে রাখা হয়েছে।

ছেলেটি টুঙ্গী স্টেশন এলাকায় ভাসমান পথশিশু হিসেবে জীবনযাবন করতো। ওই স্টেশন এলাকার বাবু নামের এক ভাংড়ীর দোকানদারের ঘরে রাত্রিযাপন করতো সাকিব। সুস্থ হবার পর অনেক কষ্টে সাকিব এসব কথা পুলিশকে জানায়।  

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো জানান, সাকিবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সদর থানা পুলিশ টুঙ্গীতে কথিত দোকানদার বাবু ও তার মায়ের সঙ্গে যোগযোগ করেছে। কিন্তু বাবু ও তার মা এখন সাকিবের আর কোন দায়িত্ব নিতে রাজী হয়নি।

ফলে নিরুপায় এই পথশিশু সাকিবকে সিরাজগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে ২/১ দিনের মধ্যে গাজীপুর কিশোর কিশোরী সংশোধনাগারে (সরকার পরিচালিত) পাঠানো হবে ।  

সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় পথশিশু সাকিবের সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, আমার থাকার কোন জায়গা নেই। তাই পুলিশের পাঠানো স্থানে যেতে আমার কোন আপত্তি নেই।