১৭ এপ্রিল, ২০২৪

ঝালকাঠিতে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ১৪

ঝালকাঠিতে সড়ক দূর্ঘটনা নিহত ১৪


ঝালকাঠিতে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ব্রেক ফেইল করে সড়ক দূর্ঘটনায় শিশুসহ মোট ১৪ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় ১৭ জন। ১৭ এপ্রিল বুধবার বেলা দেড়টার দিকে খুলনা বরিশাল মহাসড়কের  ঝালকাঠির গাবখান টোল ঘরের সামনে এই দূর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে সাথে প্রায় দুই ঘন্টা মহাসড়কের সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর বেলা সারে ৩ টার দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়ক ছেড়ে দেয়া হয়।

ঘটনার সাথে সাথে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম, পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুল ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম জানান, দূর্ঘটনার কারন জানতে ইতি মধ্যে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা, পঙ্গুত্ব বরণ করলে ৩ লাখ এবং আহতদের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষনা করেছে সরকার। 

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠি থেকে এপর্যন্ত ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাইভেট কারে একই পরিবারের ছিল ৬ জন, হাসপাতালে নেয়ার পরে মারা যায় ৪ জন এবং ঘাতক ট্রাকের ধাক্কায় উল্টে যাওয়া অপর ট্রাকের মধ্য থেকে ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও গুরুতর আহত অবস্থায় বলিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জন মারা যায়। পরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আরো একজন মারা যায়। এই কর্মকর্তা জানান, ঘাতক ট্রাকটি ব্রীজ থেকে নামার সময় গতি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ব্রেক ফেইল করায় এই দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানাগেছে।  

হাসপাতাল পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে প্রাপ্ত নিহতরা হচ্ছে, ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখের হাট ইউনিয়নের শিশু রিফাত(৫), রাফি (৩), সাদি(১৩), গাবখান ইউনিয়নের আব্দুর রহিম, নজরুল ইসলাম (৩০), সরুপকাঠি ইউনিয়নের রুহুল আমিন, গাবখানের শহিদুল ইসলাম (৩৫), ধানসিড়ি ইউনিয়নের ওস্তাখান গ্রামের মিরাজ (৪০), সোহেল (২৫), আনোয়ার , কামাল, হেমায়েত, জাহাঙ্গির এবং কাঠালিয়া উপজেলার শৌল জালিয়া ইউনিয়নের তালগাছিয়া গ্রামের তাহমিনা বেগম (২৫) ।

প্রত্যক্ষ ও স্থানীয়দের সুত্রে জানাযায়, খুলনার দিক থেকে আসা গাবখান ব্রীজ থেকে নামার সময় খুলনা মেট্রো-ট ১১-৯৫৭ নম্বরের সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি দ্রুতগতীতে টোল ঘরের দিকে যাচ্ছিল। এসময় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ঘাতক ট্রাকটি টোল দেয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা ৩টি বেটারী চালিত অটো রিক্সা, একটি প্রাভেট কার (ঢাকা মোট্র- গ ৩৯-৫৭৪২) এবং ঘরের আসবাবব পত্র বহনকারী অপর একটি ট্রাক ঢাকা মেট্র-ন ১২-২২০৪ কে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে অটোরিক্সা ৩টি এবং প্রাইভেট কারটি দুমরে মুচড়ে যায়। এসময় প্রাইভেট কার ও অটোরিক্সার ৭ জন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। 

এ বিষয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মহিতুল ইসলাম জানান, ঘাতক ট্রাকের চালক মোঃ আল আমিনসহ হেলপারকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তার কাছে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেলেও গাড়ীর কোন বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডাক্তার এসএম জহিরুল ইসলাম বলেন, সড়ক দূর্ঘটানয় হাসপাতালে আনা আহতদের সর্বচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। নিহতদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।