সুকান্ত ভট্টাচার্যের রানার কবিতার মতো বিরামহীন ছুটে চলা ব্যাক্তির নাম আলাল সরকার। আলাল ছুটে চলে অবুঝ,অবলা পশু-প্রানীর চিকিৎসা সেবায়।
তিনি বিনামুল্যে ত্রিশ বছর ধরে হতদরিদ্র পরিবারের লালন-পালন করা গরু,মহিষ,ভেড়া,ছাগল,হাস,মুরগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন।
আলাল নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার উদবাড়ীয়া গ্রামের খোরশেদ আলম সরকারের ছেলে। জানাগেছে, উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নসহ আশে পাশের গ্রামের গৃহপালিত কোন পোষা প্রানী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে প্রথমেই ডাক পড়ে তার। আলালের সাধ্যের মধ্যে থাকলে তিনি ওই অসুস্থ্য প্রাণীর চিকিৎসা দেন।
জটিল হলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে পরামর্শ দেন। গরীর পরিবারে ফ্রি ব্যবস্থাপত্র, প্রয়োজনে ফ্রি ওষুধ দিয়ে সহযোগীতা করেন তিনি। একারনে এলাকায় আলাল গরিবের ডাক্তার নামেও পরিচিত।
আলাল জানান,পারিবারিক দৈন্যতার কারনে তার পড়ালেখা বেশি দুর এগোয়নি। এসএসসি পাশের পর বিভিন্ন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত প্রশিক্ষন নিয়ে পশু চিকিৎসা শুরু করেন।
এলাকার কোন পোষা প্রাণী অসুস্থ্য হলে তিনি ব্যাথিত হল বলে জানান। চিকিৎসা দিয়ে তাকে সারিয়ে না তোলা পর্যন্ত তিনি অত্মতৃপ্তি পাননা। বোবা প্রাণীরা কথা বলতে পারেনা মা বাবার সন্তান অসুস্থ্য হলে যেমন মা বাবার কষ্ট হয় ঠিক তেমনি গরু ছাগলের অসুস্থ্য হলে তিনি ব্যাথিত হন।
ব্যাংক কর্মকর্তা কাজল সরকার জানান,একজন মানবিক পশু চিকিৎসক হিসাবে আলাল সরকারের সুনাম এলাকাজুড়ে। ছোট বেলা থেকেই তাকে দেখে আসছি বর্তমানে ষাট বছর বয়সেও সেই আগের মতোই আবিরাম ছুটতে দেখছি। তিনি পেশার প্রতি আন্তরিক নির্লোভ একজন মানুষ।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান,আলাল সরকার উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষন নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গবাদি পশুর চিকিৎসা দিচ্ছেন। তিনি মানবিক একজন মানুষ। পোষা প্রাণীর প্রতি তার ভালোবাসা-আন্তরিকতা এ বিভাগের সুনাম বৃদ্ধি করেছে।