নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে অত্যন্ত নিম্নমানের উপকরণ সরবরাহ করে অনৈতিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জনিয়েছেন শিক্ষকবৃন্দ।
জানা গেছে, চতুর্থ প্রাথমিক উন্নয়ন কর্মসূচির (পিডিবি-৪) আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারাদেশের ন্যায় বদলগাছী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে ৩ দিনব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শিক্ষাক্রম বিস্তারণ প্রশিক্ষণ গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে।
এই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য সরকারি বরাদ্দ থেকে মোটা অংকের টাকা বাঁচিয়ে নিম্নমানের প্রশিক্ষণ উপকরণ প্রদানসহ নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলাম।
সরজমিনে দেখা গেছে, প্রশিক্ষণার্থীদের যে তথ্যপত্র সরবরাহ করা হয়েছে তার সর্বোচ্চ মূল্য ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া ১০০ টাকা মূল্যের একটি কলম, ৫-১০ টাকা মূল্যের একটি নেমকার্ড, ডাক্তারদের ফ্রি দেওয়ার ঔষধ কোম্পানির প্যাড ক্রয় বাবদ মূল্য দেখিয়েছে এসব ফ্রি প্যাড ২০ থেকে ৩০ টাকা মূল্যের।যা সর্বমোট ২৩৫ -২৬০ মূল্যের উপকরণ।
একটি ব্যাগ (মহিলা/পুরুষ প্রশিক্ষণার্থীদের লেডিস এবং জেন্টস) যার মূল্য ৩৫০-৩৮০টাকার। সর্বোমোট ৬৪০ র্টাকার প্রশিক্ষণ উপকরণ সরবরাহ করেছেন।
এসব খাতে প্রতি প্রশিক্ষণার্থীর জন্য ১ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও ব্যয় করা হচ্ছে সাড়ে ৬৪০ টাকা।এর সাথে ১০ শতাংশ সরকারি ভ্যাট ৬৪ টাকা যোগ করলে তা দাঁড়ায় ৭০৪টাকা। অথচ একজন প্রশিক্ষণার্থীর সর্বমোট বরাদ্দ ব্যাগ ও উপকরণ মিলে (৫০০+৫০০) ১ হাজার টাকা।
প্রতিটি ব্যাচে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের এমন সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। উপকরণগুলো সাথে বরাদ্দের অর্থের মিল না হওয়ায় প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষকদের মধ্যে চরমভাবে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ইতোমধ্যে ৫ টি ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এভাবে ২০ টি ব্যাচে মোট ৬০০ জন প্রশিক্ষণার্থীর নিকট থেকে তিনি ১ লাখ৭৭হাজার৬শত টাকা হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, চতুর্থ ব্যাচে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শিক্ষক নেতা ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের ম্যনেজ করে এ সকল অনিয়ম করছে ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলাম।ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলামের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকবৃন্দ।
ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষক বলেন, বদলগাছী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে প্রতিব্যাচে ৩০ জন করে ২০ টি ব্যাচে মোট ৬০০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য তথ্যপত্র, কলম, প্যাড, নেমকার্ড, পেন্সিল, ইরেজার-এর জন্য বরাদ্দ ৫০০ টাকা এবং প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর ব্যাগ বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ৫০০ টাকা। দিনপ্রতি সম্মানী ৫শ’ টাকা ও লান্স বাবদ বরাদ্দ আছে ২৮০ টাকা।
এব্যপারে বদলগাছী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম বলেন, উপকরণ ও ব্যাগ বিভিন্ন মূল্যের আছে কত দিয়ে কিনেছে আমি বলতে পারবো না। এ ব্যপারে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনসট্রাক্টর
ভালো বলতে পারবেন। তবে উপজেলাতে ২০টি ব্যাচে ৩০জন করে মোট ৬০০জন শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জানার জন্য মুঠোফোনে বদলগাছী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আচ্ছা ঠিক আছে এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই বলে ফোন কেটে দেন।
জেলা পিটিআই এর সুপারিনটেনডেন্ট খন্দকার মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, এ ব্যপারে পরে আপনাকে ফোন দিচ্ছি ফোন কেটে দেন।