মহা ৬ষ্ঠী পূজা উপলক্ষ্যে ‘মায়ের প্রতি সন্তানের ভক্তি-শ্রদ্ধা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে মায়ের পা ধুয়ে দিচ্ছে সন্তানরা।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ বড়ভিটা জেলে পাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে মায়েদের নতুন কাপড় পড়িয়ে চেয়ারে বসিয়ে প্রতিটি সন্তান তাদের মায়ের পা ধুয়ে দিচ্ছেন।
এ সময় সন্তানদেরসঙ্গে স্ত্রী-সন্তানরাও অংশ নেন। তারপর মুছে দিচ্ছে মায়ের পা। এরপর মায়ের গলায় ফুলের মাল্য পড়িয়ে চরণে ফুল দিয়ে ভক্তি-শ্রদ্ধা করেন। সন্তানদের এমন ভালবাসা ও ভক্তি শ্রদ্ধা দেখে আনন্দে মায়েদের চোখ বেয়ে অশ্রু নেমে আসে।
দক্ষিণ বড়ভিটা জেলে পাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে ওই এলাকার ৮ জন সন্তানসহ তাদের বয়স্ক মায়েরা অংশ নেন। মায়েদের সামনে মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত শতশত মানুষের নজর কেড়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ,খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অনীল চন্দ্র রায়, বড়ভিটা পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি কিশোরী চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক হরিশংকর চন্দ্র রায় ও ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন।
দক্ষিণ বড়ভিটা জেলে পাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক তারা নাথ বিশ্বাস জানান, আমাদের গ্রামের তরুন প্রজন্মদের প্রতি তাদের মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি বাড়ানোর জন্য এই প্রথম বার আমরা মায়ের প্রতি সন্তানের ভক্তি-শ্রদ্ধা শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করি। আশাকরি এই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে সন্তানদের মাঝে মা-বাবার প্রতি ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
বড়ভিটা ইউনিয়নের পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিশংকর চন্দ্র রায় জানান, এই অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে জীবিত মায়েদের পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মা এবং সন্তানদের ভালবাসার সর্ম্পক সু-মধুর করার লক্ষ্যে আমরা এই আয়োজনটি করেছি। এই আয়োজনটির মাধ্যমে সমাজে প্রতিটি মানুষ তাদের মা-সন্তানদের ভালবাসার বন্ধন চিরস্থানীয় হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য, পরিষদ ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অনীল চন্দ্র রায় বলেন, মহা ৬ষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী শারদীয় দূর্গা উৎসব শুরু হয়েছে।
৬ষ্ঠী পূজা উপলক্ষ্যে ”মায়ের প্রতি সন্তানের ভক্তি-শ্রদ্ধা” শীর্ষক অনুষ্ঠানটিতে অংশ গ্রহন করতে পেরে আমি ধন্য।
মা দূর্গার সামনে যে ৮ জন জীবিত মাকে তাদের সন্তান যেভাবে পা-ধুয়ে মুছে, মায়ের চরণে পুজা অর্চনা করে এক দৃষ্টান্ত নজির সৃষ্টি করেছেন পূজা কমিটি। এরকম শিক্ষানীয় আয়োজন করলে ছেলেরা যেমন মা-বাবার প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা অনেক অনেক গুন বাড়বে।
সেই সাথে ছেলের বৌমারাও তাদের শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি বেড়ে যাবে। ফলে বৃদ্ধাশ্রমে আর কোন বাবা-মাকে যেতে হবে না বলে আমার বিশ্বাস।